পাচারের টাকা ফেরত পাওয়ার মত আনন্দের কিছুই নেই: আইসিএবির সভাপতি

আইসিএবির সভাপতি শাহাদাত হোসাইন এফসিএ বলেছেন, চুরি যাওয়া অর্থ যদি আপনি ফেরত পান তাহলে এর থেকে আনন্দের আর কিছু নেই। পাচার হয়ে যাওয়া টাকা ফিরিয়ে আনতে যে সুযোগ দেয়া হয়েছে তা ন্যায্যতার ভিত্তিতে গ্রহণযোগ্য না হলেও, অনেক সময় বাস্তবতার প্রেক্ষিতে এমন কিছু পদক্ষেপ সরকারকে নিতে হয়।

শনিবার (১১ জুন) আইসিএবি কাউন্সিল হলে আয়োজিত ‘প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের উপর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের ভাবনা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে ‘পাচার হয়ে যাওয়া টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার সুযোগ’ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

শাহাদাত হোসাইন বলেন, এমন সুযোগ বাংলাদেশে প্রথমবার দেয়া হয়নি। তবে এবারের বাজেটের পরেই বিষয়টি নিয়ে বেশি আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। আগের অনেক বাজেটেও এই বিষয়টি দেখা গিয়েছে। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের ক্ষেত্রেও আপনারা দেখবেন পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে এরকম সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে।

পণ্য ও সেবা রপ্তানিকারী অন্যান্য সাধারণ শিল্পের জন্য ১২ শতাংশ এবং গ্রিন শিল্পের জন্য ১০ শতাংশ করের হার প্রবর্তন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ধরণের পদক্ষেপ পণ্য ও পরিষেবার রপ্তানির বৈচিত্র্যকে উৎসাহিত করবে। তাছাড়া একত্রীকরণ এবং গবেষণা ও উন্নয়নের সংজ্ঞা পরিবর্তন করা, প্রাক প্রবর্তন ব্যয়ের পরিমার্জন এবং স্টার্ট-আপ ব্যবসার জন্য পৃথক বিধান, যা নতুন প্রজন্মে ব্যবসায়িক ও সৃজনশীল উদ্যোগে অনুপ্রেরণামূলক ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করবে।

আইসিএবির সভাপতি বলেন, ব্যবসায়িক পরিষেবার উপর ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট, মূসক রেয়াত গ্রহণের সময়সীমা ২ করমেয়াদ থেকে ৪ করমেয়াদ পর্যন্ত বৃদ্ধি করার প্রস্তাব, জরিমানা ১০০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ ১০০ শতাংশ কমানো, বন্ডেড ওয়্যারহাউসে অপারেশন ইলেকট্রনিকভাবে সম্পাদন করা- এ বিষয়গুলো যুগোপযোগী এবং ব্যবসাবান্ধব।

তিনি আরো বলেন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টগণ কর পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রে, কর পরামর্শক হিসেবে, কর আইনের সঠিক প্রতিপালন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে করদাতাও সরকারকে সহায়তা করে থাকে। সর্বোপরি রাজস্ব আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। দেশে এফডিআই আনা এবং উদ্যোক্তাদেরকে নতুন নতুন ব্যবসায়ে উৎসাহিত ও পরামর্শ প্রদান করা, ব্যবসা করার সহজতা নিশ্চিত করা, কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থনীতিতে অবদান রাখতে বিশেষ মতামত প্রদানের মাধ্যমে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তা করে আসছেন।

এ সময় প্রস্তাবিত আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটকে বিনিয়োগ বান্ধব ও সময়োপযোগী বলে দাবি করেছেন ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রস্তাবিত বাজেট দেশের জিডিপি ১৫.২ শতাংশ। বাজেটে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২.৩২ শতাংশ। চ্যালেঞ্জ থাকলেও এই যুগোপযোগী বাজেট প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাস্তবায়ন সম্ভব বলে আমরা মনে করি। মহামারী পরবর্তী পরিস্থিতি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অন্যান্য বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও সরকার ২৪৬,০৬৬ কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ নিয়েছে, যা আমাদের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের এগিয়ে যাওয়ার জন্য অত্যন্ত উৎসাহজনক পদক্ষেপ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইসিএবির সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, কাউন্সিল মেম্বার সাব্বির আহমেদ, আব্দুল কাদের জোয়াদ্দার, এমবিএম লুৎফুল হাদী, সিইও শুভাশীষ বসু প্রমুখ ।

অর্থসূচক/এমআর/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.