করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব এমসিসিআইয়ের

ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের করমুক্ত আয় সীমা ২ লাখ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে মেট্রপলিট্যান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড এসোসিয়েশন (এমসিসিআই)। বর্তমানে করমুক্ত আয় সীমা ৩ লাখ টাকা, যা ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে কার্যকর আছে। এটিকে ৫ লাখ টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব দিয়েছে এমসিসিআই।

আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় এই প্রস্তাব করেছে সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) রাতে পাঠানো এক  সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে তারা এই বাজেট সম্পর্কে তাদের মতামত তুলে ধরেছে।

এর আগে একইদিন বিকালে জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন।

বাজেট প্রতিক্রিয়ায় করমুক্ত আয়সীমা না বাড়ানোয় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এমসিসিআই। এ বিষয়ে সংগঠনটি বলেছে, আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ঠিকই। কিন্তু একইসাথে বেড়েছে পণ্যমূল্যসহ সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি। তাই এর সাথে সঙ্গতি রেখে করমুক্ত আয়সীমা সমন্বয় করা প্রয়োজন।

এমসিসিআই কর প্রত্যার্পণের (Tax Refund) এর জন্য প্রতীকী হলেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে একটি আলাদা তহবিল রাখার প্রস্তাব দিয়েছে।

ঘোষিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার (পাচার করা অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনা) প্রস্তাবের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংগঠনটি বলেছে, একটি নির্দিষ্ট কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ চরম বৈষম্যমূলক। এতে সৎ করদাতারা কর পরিশোধে নিরুৎসাহিত হন। এই ধরনের সুযোগ আমাদের আর্থিক ও অ্যাকাউন্টিং চর্চাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাছাড়া অতীতে এই ধরনের সুযোগ দিয়ে কাঙ্খিত ফল পাওয়া যায়নি।

দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের এ ফোরাম টার্নওভার ট্যাক্স প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। এ বিষয়ে তারা বলেছে, টার্নওভার ট্যাক্স আয়করের মূলনীতির পরিপন্থী। আয়কর নীতি অনুসারে, কোনো প্রতিষ্ঠান মুনাফা বা আয় করলেই কেবল তা থেকে আয়কর আদায় করা যায়; কোম্পানির রাজস্ব বা কোনো তহবিল থেকে নয়।

এমসিসিআই তালিকাভুক্ত ও তালিকা-বহির্ভূত কোম্পানির করপোরেট কর হার হ্রাস, রপ্তানীমুখী সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য করপোরেট করের অভিন্ন হার (১২%) নির্ধারণ, মূল্যসংযোজন করের (ভ্যাট) ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয়ভাবে নিবন্ধনের সুবিধাসহ বেশ কিছু প্রস্তাবনাকে ইতিবাচক বলে অভিহিত করেছে।

এমসিসিআই সভাপতি ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে জাতীয় বাজেটের বাস্তবায়ন, পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়নের তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শুধু বিশেষ সময়ের জন্য নয়, সব সময়ের জন্যেই এটি অনুসরণ করা উচিত।

এমসিসিআই মনে করেন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরবর্তী বিশ্বব্যবস্থায় বাংলাদেশ রপ্তানিক্ষেত্রে একটি হাওয়ারহাউজ হিসেবে উঠে আসতে পারে। তার জন্য রপ্তানি বহুমুখীকরণ, অবকাঠামো ও প্রযুক্তিগত সুবিধা বাড়ানো, সাশ্রয়ী তবিল যোগান ইত্যাদি  উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.