‘পঞ্চাশ বছর পর মানুষ গড়ে ৮৪ বছর বাঁচবে’

চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উন্নতি দেশে মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু বেড়ে চলেছে। গত ১০ বছরে  প্রত্যাশিত গড় আয়ুষ্কাল বেড়েছে ৫ দশমিক ১০ বছর। আগামী ৫৩ বছরে এটি আরও ১১ দশমিক ৫ বছর বাড়বে। তখন গড় আয়ুষ্কাল দাঁড়াবে ৮৪ দশমিক ৩ বছর।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে আগামী ২০২২-২৩ আর্থবছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণাকালে অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল এই তথ্য জানিয়েছেন।

উপস্থাপিত তথ্য অনুসারে, ২০০৬ সালে দেশে মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ুষ্কাল ছিল ৬৫ দশমিক ৪ বছর। এটি ২০১০ সালে বেড়ে ৬৭ দশমিক ৭ বছর হয়। আর ২০১৫ সালে গড় আয়ু দাঁড়ায় ৭০ দশমিক ৯ বছর। অন্যদিকে ২০২০ সালে ৭২ দশমিক ৮ বছর ছিল মানুষের গড় আয়ু।

২০৫০ সালে দেশের মানুষের গড় আয়ু দাঁড়াবে ৭৯ দশমিক ৯ বছর। আর ২০৭৫ সালে মানুষ গড়ে ৮৪ দশমিক ৩ বছর বাঁচবে।

গড় আয়ু বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি আপাতত খুশির খবর হলেও এটি নানা উদ্বেগেরও বিষয় বটে। কারণ মানুষ যত বেশি বাঁচবে তত বেশি নির্ভরশীলতা বাড়বে। পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের সুরক্ষার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকলে সেটি এক মানবিক সঙ্কটের জন্ম দিতে পারে।

প্রত্যাশিত গড় আয়ু বৃদ্ধির বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালে বাংলাদেশে ষাটোর্ধ্ব জনসংখ্যা ছিল ১ কোটি ২০ লাখ, যা ২০৪১ সালে ৩  কোটি ১০ লাখএবং ২০৬১ সালে ৫ কোটি ৫৭ লাখে দাঁড়াবে। প্রত্যাশিত গড় আয়ু বর্তমানে ৭৩ বছর যা ২০৫০ সালে ৭৯.৯ বছর এবং ২০৭৫ সালে ৮৪.৩ বছর হবে। আগামী তিন দশকে অবসরের পরও ২০ বছর আয়ু থাকবে। বর্তমানে নির্ভরশীলতার হার (Dependency Ratio) ৭.৭ শতাংশ যা ২০৫০ সালে ২৪.০ শতাংশ এবং ২০৭৫ সালে ৪৮ শতাংশে উন্নীত হবে। প্রত্যাশিত গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণে ধীরে ধীরে বয়স্ক জনসংখ্যা বাড়তে থাকবে। আমাদের দেশে একান্নবর্তী পরিবারের মাধ্যমে বয়স্ক ব্যক্তিবর্গের জন্য গ্রামে যে সামাজিক সুরক্ষাসহ নিরাপত্তাবলয় ছিল তা ক্রমান্বয়ে হারিয়ে যাচ্ছে। একক পরিবারে বসবাস বৃদ্ধি পাবার কারণে বয়োবৃদ্ধদের নিরাপত্তা ক্রমান্বয়ে হুমকির দিকে ধাবিত হচ্ছে।

আগামী দিনে বয়োবৃদ্ধদের নিরাপত্তার ঝুঁকি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকার সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান তিনি।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.