বিদেশে ৮ লাখ কর্মীকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা সরকার

২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৮ লাখ ১০ হাজার কর্মীকে বিদেশে কর্মসংস্থানে ব্যবস্থা সরকার করবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।  বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার প্রবাসী ও প্রবাস থেকে প্রত্যাগত কর্মীদের কল্যাণে নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছে। রিক্রুটিং এজেন্টগুলোর কার্যক্রম প্রতিনিয়ত তদারকির ফলে অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা নিশ্চিত হয়েছে। কর্মী নিয়োগে পেশাভিত্তিক ডাটাবেজ, মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে ভিসা যাচাই, অভিবাসন বিষয়ক অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তির জন্য পৃথক পোর্টাল, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) কার্যক্রম অটোমেশন ইত্যাদি কর্মসূচির মাধ্যমে এ খাতকে সম্পূর্ণভাবে ডিজিটালাইজ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রত্যাগত কর্মীদের রিইন্টিগ্রেশন ও আত্মকর্মসংস্থানের জন্য সহজ শর্তে ‘বিনিয়োগ ঋণ’, প্রবাসী কর্মীর মেধাবী সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান, অক্ষম প্রবাসী কর্মীদের দেশে ফেরার পর চিকিৎসা সহায়তা প্রদানসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আগামীতে অভিবাসনে পিছিয়ে পড়া দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ সমগ্র দেশ থেকে অধিকহারে অভিবাসনে উৎসাহী করার লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে দেশের সকল উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে উপজেলা পর্যায়ে ১০০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণকাজ আরম্ভ করা হবে। এছাড়া, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৮ লাখ ১০ হাজার বাংলাদেশি কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা এবং ৫ লাখ ২০ হাজার জনকে বিভিন্ন ট্রেডে দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ স্লোগান নিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে জাতীয় সংসদে। নতুন এ বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। আগামী অর্থবছরের বাজেটে বড় ব্যয়ের বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। যেখানে বাজেটে অনুদান ছাড়া ঘাটতির আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ ঘাটতি থাকবে ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।

২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। যা চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি। প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের আয়ের খাতগুলো থেকে কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার। এর মধ্যে এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি। বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.