স্ত্রীর হাত কেটে স্বামী গ্রেপ্তার

কেতুগ্রামের রেণু খাতুন ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন সরিফুল শেখকে। আড়াই বছর ধরে প্রেম করার পর বিয়ে হয়েছিল তাদের। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে গত পাঁচ বছর ধরে সংসার করছিলেন রেণু। কিন্তু হঠাৎ স্ত্রী রেণু খাতুনের হাত কাটার অভিযোগে পলাতক স্বামী সরিফুল শেখকে গ্রেপ্তার করলো পুলিশ। যদিও স্ত্রীর হাত কাটার পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল স্বামী সরিফুল নিজেই।

তারপর পুলিশ মঙ্গলবার সরিফুলের বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করেছিল। তারা জানিয়েছেন, তারা ঘুমচ্ছিলেন। কোনো শব্দ তারা শুনতে পাননি। পুলিশ বিকেলে সরিফুলকে ধরে। বুধবার তাকে ভারতের কাটোয়ার মহকুমা আদালতে পেশ করা হবে।

রেণুর স্বামীকে ধরার জন্য ভারতের কেতুগ্রাম পুলিশ কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে আশপাশের জেলাগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এফআইআরে যাদের নামে অভিযোগ করা হয়েছিল, তাদের সকলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেখানে রেণুর স্বামীর দুই বন্ধুর উল্লেখ ছিল। তারা কারা, সে ব্যাপারে পুলিশ খোঁজ করছে।

সরিফুল শেখ কিছুতেই বউকে চাকরি করতে দিতে চাইতেন না। তার ধারণা ছিল, চাকরি করলেই বউ তাকে ফেলে চাকরির জায়গায় চলে যাবে। রেণু তাকে অনেক বুঝিয়েছিল। কিন্তু সে বোঝেনি। রেণুর অভিযোগ, বন্ধুরাই তাকে এই সব মাথায় ঢুকিয়েছিল। রেণু নার্স হিসাবে সরকারি চাকরি পায়। এই নিয়োগপত্র পাওয়ার পরই সরিফুল বলতে থাকে চাকরি করা যাবে না।

গত শনিবার শ্বশুরবাড়িতে ঘুমিয়ে ছিল রেণু। গভীর রাতে তার স্বামী বন্ধুদের নিয়ে ঘরে ঢোকে। রেণুর মুখ বালিশ দিয়ে চেপে ধরে। তারপর ডান হাতের কব্জিতে কোপ মেরে রেণুর হাত কেটে দেয় বলে অভিযোগ। তারপর তাকে কাটোয়া হাসপাতালে নিয়ে যায় অভিযুক্ত স্বামী। সেখান থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে।

রেণুর চিকিৎসা করছেন চিকিৎসক পি মিশ্র। তার হাতে অপারেশনও করতে হয়েছে। চিকিৎসকদের কাছে প্রশ্ন, রেণু কীভাবে আবার স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবে। চিকিৎসকরা বলছেন, তার একটা উপায় কৃত্রিম হাত লাগানো।

রেণু আর শ্বশুরবাড়িতে যেতে চান না। তিনি বলেছেন, স্বামী সরিফুল শেখ সহ দোষী সকলের শাস্তি চান। তিনি চান, তার চাকরি যেন থাকে। তিনি যেন সুস্থ হয়ে যেন চাকরিতে যোগ দিতে পারেন। সূত্র: ডিডাব্লিউ

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.