গ্রেপ্তার হতে পারেন ইমরান খান

সরকারবিরোধী কর্মসূচিকে ঘিরে সম্ভাব্য সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনা এড়াতে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খানকে গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ সরকার। একইসঙ্গে গ্রেপ্তার করা হতে পারে দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতাকেও।

বুধবার (২৫ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।

খবরে বলা হয়েছে, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বুধবার পেশোয়ার থেকে ইসলামাবাদে যাওয়ার পথে পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানকে দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে আটক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

সূত্রের বরাদ দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, ‘যদিও লংমার্চের সময় ইমরানসহ অন্যান্য পিটিআই নেতাকে গ্রেপ্তার করা অসম্ভব বলে মনে হলেও সরকারবিরোধী কর্মসূচিকে ঘিরে সম্ভাব্য সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনা এড়াতে তাদের আটক করা ছাড়া সরকারের আর কোনো উপায় নেই।’

জানা গেছে, ইমরান খানকে আটকের পর সম্ভাব্য বিভিন্ন দিক নিয়ে বেশ কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে বিশদভাবে আলোচনা করেছে সরকার। তবে আলোচনা শেষে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে আটকের পরিকল্পনাটি এগিয়ে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার এসব বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

অন্যদিকে পাকিস্তানের আরেক শীর্ষ সংবাদমাধ্যম দ্য ডন জানিয়েছে, ইমরান খানের ডাকে রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে যাওয়ার সময় দেশটির লাহোরে পিটিআই কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পিটিআই কর্মীদের ইসলামাবাদ অভিমুখে পদযাত্রা বন্ধ করতে মহাসড়কের ওপর শিপিং কন্টেইনারও রাখার অভিযোগ ওঠে।

গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে জানা গেছে, লংমার্চের সময় পিটিআই কর্মীরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যেকোনো প্রতিরোধের মোকাবিলায় সুসজ্জিত থাকবে এবং সরকারি সংস্থাগুলো ভালোভাবেই জানে যে এই পরিস্থিতিতে সংঘর্ষ এড়ানো যাবে না।

ইমরানের দলের কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের বেশ কিছু ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্লাটফর্মে ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া লাহোরের বাটি ও ভাট্টি চক এলাকায়ও উভয়পক্ষের সংঘর্ষের ছবি দেশটির টেলিভিশন ফুটেজে উঠে এসেছে। এসব ভিডিও ও টেলিভিশন ফুটেজে পিটিআই কর্মীদের ওপর পুলিশকে হামলা চালাতে দেখা যায়।

এছাড়া পাকিস্তানের অন্যান্য শহরেও সংঘর্ষের বিভিন্ন ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে। সেসব ভিডিওতে পিটিআই কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলতে দেখা যায় এবং পুলিশ কর্মকর্তারা মিছিলকারীদের ওপর টিয়ার শেল নিক্ষেপের মাধ্যমে হামলা করছে বলে দেখা যায়।

এর আগে পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া ও জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ করার ঘোষণা দেন ইমরান খান। বুধবার এই লংমার্চ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে এবং এর ঘোষণা দেওয়ার সময় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আমি ২৫ তারিখে ইসলামাবাদের শ্রীনগর মহাসড়কে আপনাদের সঙ্গে দেখা করব। সবাই এমনভাবে বের হবেন যাতে আপনারা সেখানে বিকেল ৩টায় পৌঁছান।’

লংমার্চে সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারে পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কখনোই (নতুন সরকারকে) মেনে নেবো না – যতদিন ইসলামাবাদে থাকতেই হোক না কেন, আমরা সেখানেই থাকব।’

মূলত ইমরানের এই ঘোষণার পরই পাকিস্তানের রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি ইমরান খান দেশে গৃহযুদ্ধ চান বলেও এরপর অভিযোগ করেছিলেন দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। এদিকে বিক্ষোভকারীদেরকে ঘর হতে বের হতে দিবেন না বলে জানান পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.