করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানোর সম্ভাবনা নেই

আসছে বাজেট ২০২২-২৩

আসছে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণি করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানোর সম্ভাবনা নেই বলে জানা গেছে। অর্থাৎ এই শ্রেণীর করমুক্ত আয়ের সীমা আগের মতোই ৩ লাখ টাকা বহাল থাকতে পারে।

করোনা-পরবর্তী জনগণের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়া ও বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সীমিত আয়ের মানুষ কষ্টে আছে। এই বিবেচনায় ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা বিদ্যমান ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে কমপক্ষে সাড়ে ৩ লাখ টাকায় উন্নীত করার দাবি জানান ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআইসহ অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।

জানা গেছে, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে ব্যক্তি করে ছাড় দেয়ার বিষয়ে কোনো প্রস্তাব করা হয়নি। এনবিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়, সাড়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ছাড় দেয়া হলে আয়কর আহরণের দিক থেকে অনেক ক্ষতি হবে। এর চেয়ে কম ছাড় দেয়া হলে প্রান্তিক করদাতারা তেমন উপকৃত হবে না। যে কারণে ব্যক্তি করদাতার আয়করে ছাড়ের প্রস্তাবটি আগের মতোই অপরিবর্তিত রাখার পক্ষে এনবিআর।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা অতিমারি শুরু হওয়ার পর অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বিরূপ প্রভাব পড়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে। এতে করে দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়।
সেই সময়, সাধারণ মানুষের অবস্থা বিবেচনা করে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তি করদাতার আয়ে ব্যাপক ছাড় দেয়া হয়। ওই অর্থবছর বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ও যাতায়াত ভাতা বাদ দিয়ে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ টাকার পরিবর্তে বার্ষিক ৩ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর পর থেকে তা অপিরবর্তিত রাখা হয়।

বর্তমানে করোনার প্রভাব কাটিয়ে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ালেও রাশিয়া-ইউক্রেন সাম্প্রতিক যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে সবকিছুর দাম বেড়ে যায়। এর প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ অন্যান্য পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয়ও বাড়ে। বর্তমান বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণি করে আরও ছাড় দেয়ার জোরালো দাবি ওঠে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, করমুক্ত আয়ের সীমা আরও বাড়ানো উচিত। তবে এটাও ঠিক, বাংলাদেশে অনেকেরই কর দেয়ার সামর্থ্য আছে । তাদের বেশির ভাগই এখনও করের নেটে নেই। যোগ্য সবাইকে করের আওতায় আনতে হবে।

প্রসঙ্গত, এখন নিবন্ধিত বা টিআইএনধারীর সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ হলেও আয়কর রিটার্ন জমা দেন মাত্র ২৫ লাখ। এর মধ্যে কমপক্ষে তিন লাখ রিটার্ন আছে যাদের আয় শূন্য। তাদের কাছ থেকে কোনো কর পায় না সরকার। ফলে নিয়মিত রিটার্ন দিচ্ছেন মাত্র ২২ থেকে ২৩ লাখ।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.