অতিরিক্ত গরমে আকাশ থেকে পড়ে যাচ্ছে পাখিরা

পশ্চিম ভারতে টানা তিনমাস ধরে অব্যাহত হিটওয়েভ বা তাপদাহ এবং তাপমাত্রা অনবরত বৃদ্ধি পাবার ফলে ক্লান্তি এবং ডিহাইড্রেশনে আকাশ থেকে পরে যাচ্ছে পাখিরা।

জানা গেছে, পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটে কয়েক সপ্তাহ ধরে গড় তাপমাত্রা ৪০ডিগ্রী সেলসিয়াসের উপরে রয়েছে এবং একই রাজ্যের বেশ কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস ছুয়েছে। আর এই অত্যাধিক তাপমাত্রা সহ্য করতে  না পেরে অসুস্থ হয়ে আকাশ থেকে পরে যাচ্ছে অনেক পাখি। উদ্ধারকারীরা প্রতিদিন আকাশ থেকে পড়ে যাওয়া এসব পাখিদের উদ্ধারের কাজ করে যাচ্ছেন।

খবর ইন্ডিপেনডেন্টের।

এছাড়াও, প্রাণীদের উপর প্রচণ্ড উত্তাপের প্রভাবের পাশাপাশি রাজ্যটির বেশ কিছু অঞ্চলে অরিতিক্ত তাপমাত্রার ফলে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন সেখানকার বাসিন্দারা। বাড়ছে হিটস্ট্রোক ও ডিহাইড্রেশন সহ নানা ধরণের রোগের প্রভাব। তাপমাত্রা জনিত অসুস্থ রোগীদের জন্য বেশ কিছু হাসপাতালে নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যাবস্থা।

অন্যদিকে গুজরাটের অলাভজনক জীবদয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দ্বারা পরিচালিত একটি পশু হাসপাতালে কর্মরত উদ্ধারকারীদের মতে পশ্চিম ভারতে এই বছরের উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাব “সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বাজেগুলোর একটি”। এর ফলে পাখি ও অন্যান্য প্রাণীদের অবস্থার উল্লেখযোগ্যভাবে অবনতি হয়েছে৷

জীবদয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টটির সাথে যুক্ত মনোজ ভাবসার নামের এক ব্যাক্তি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, “অঞ্চলটিতে উদ্ধার করা প্রয়োজন এমন পাখির সংখ্যা ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে”। তিনি গুজরাটের ট্রাস্টটির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন এবং এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পাখিদের উদ্ধার করছেন।

স্বেচ্ছাসেবীরা এই পাখিগুলিকে তুলে ট্রাস্ট পরিচালিত হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন, যেখানে পাখিগুলোকে সিরিঞ্জ ব্যবহার করে তাদের পানি পান করানো এবং মাল্টি-ভিটামিন ট্যাবলেট খাওয়ানোর মাধ্যমে তাৎক্ষণিক যত্ন প্রদান করা হচ্ছে।

এই বছর ভারত ও পাকিস্তানে খুব দ্রুতই চরম গরম বা তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে, যা এতোটাই দ্রুত যে অতিরিক্ত তাপমাত্রার প্রথম প্রভাব মার্চের শুরুর দিকে রেকর্ড করা হয়েছিল, যেখানে উপমহাদেশে তাপপ্রবাহ সাধারণত মে মাসে বা কিছু ক্ষেত্রে এপ্রিল মাসে রিপোর্ট করা হয়।

যদিও বিশ্লেষকেরা মনে করেন তাপপ্রবাহের ধরণে এই পরিবর্তন বিভিন্ন কারণে শক্তিশালী এবং দীর্ঘতর হচ্ছে, এই চরম আবহাওয়াজনিত বিপর্যয়ের অন্তর্নিহিত কারণ হল জলবায়ু পরিবর্তন।

অর্থসূচক/এমআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.