রানারের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির মামলা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি রানার অটোমোবাইলস লিমিটেডের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। মূল্য সংযোজন কর (Value Added Tax-VAT) আইনের আওতায় এই মামলা করা হয়।

আজ বুধবার (১১ মে) ভ্যাট গোয়েন্দা দপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

কোম্পানিটির বিরুদ্ধে ১৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ এনেছে কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন সময়ে ফাঁকি দেওয়া এই ভ্যাটের উপর প্রযোজ্য সুদ হিসাব করে প্রায় ২১ কোটি টাকা আদায়ের দাবিতে এই মামলা করা হয়েছে।

নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর (মূল্য সংযোজন কর) সূত্রে জানা গেছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ক্রেতার অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৩০ মার্চ রানারের প্রধান কার্যালয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট গোয়েন্দা দল অভিযান চালায়। ভ্যাট গোয়েন্দার সহকারী পরিচালক মো. হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে পরিচালিত এ অভিযানে প্রাথমিকভাবে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ৭০ কোটি ৪৭ লাখ টাকার ভ্যাটযোগ্য বিক্রয়মূল্য গোপন করেছে। এ গোপনকৃত বিক্রয়মূল্যে প্রায় ২০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দেয়া হয়েছে।

সংস্থাটি জানায়, রানার মাসিক দাখিলপত্রে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। এর প্রেক্ষিতে ভ্যাট গোয়েন্দাদের একটি দল পরিদর্শনে দিয়ে কোম্পানিটির কাছে প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট সংক্রান্ত ও বাণিজ্যিক দলিলাদি প্রদর্শনের জন্য অনুরোধ করেন। কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) শনদ দত্ত ভ্যাট কর্মকর্তাদের চাহিদা অনুসারে ভ্যাট দলিল উপস্থাপন করেন। কিন্তু পরিদর্শন দলটির সন্দেহ হওয়ায় তারা কার্যালয়ে আরও অনুসন্ধান চালান। তাতে কার্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে রাখা কিছু বাণিজ্যিক ও মূসক সংশ্লিষ্ট দলিলাদি পাওয়া যায়, যার আলোকে কোম্পানির উপস্থাপন করা দলিলাদির সাথে ব্যাপক গরমিল স্পষ্ট হয়ে উঠে। এরপর ভ্যাট গোয়েন্দা দপ্তর তদন্ত শুরু করে।

এতে দেখা যায়, ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি ১ হাজার ৮৩৪ কোটি ৪৯ লাখ ৮১ হাজার ৮১৭ টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি মাসিক রিটার্নে সর্বমোট ১ হাজার ৭৬৪ কোটি ২ লাখ ৩৩ হাজার ১৫৬ টাকা বিক্রয় হিসাব প্রদর্শন করেছে। রিটার্ন ও প্রকৃত বিক্রয়ের পার্থক্য পাওয়া যায় ৭০ কোটি ৪৭ লাখ ৪৮ হাজার ৬৬১ টাকা।

প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করায় ১৫ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার ২৭৬ টাকা ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে। এই ফাঁকির ওপর ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২ শতাংশ হারে সুদ আসে ৫ কোটি ২৬ লাখ ৯ হাজার ৩৯৫ টাকা। সুদসহ সর্বমোট ২০ কোটি ৮৫ লাখ ৬৬ হাজার ৬৭১ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে রানার।

এসব ভ্যাট আদায় ও পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটে পাঠনো হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি সেবাদানের বিপরীতে মূসক চালান যথাযথভাবে পাঠাচ্ছে কি না তা তদারকি করতে সংশ্লিষ্ট মূসক সার্কেল ও বিভাগীয় কার্যালকে অনুরোধ করা হয়েছে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.