দনেৎস্ক দখলে মরিয়া রাশিয়া, ভূত ড্রোন পাঠাচ্ছে আমেরিকা

বৃহস্পতিবার বিকেলে রাশিয়া দাবি করেছে, মারিউপল এখন সম্পূর্ণ তাদের দখলে। যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, মারিউপল রাশিয়া দখল করে নিয়েছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ সত্য নয়। এখনো সেখানে লড়াই চলছে।

পেন্টাগনও জানিয়েছে, রাশিয়ার দাবি এখনো পর্যন্ত খতিয়ে দেখা সম্ভব হয়নি। তবে একটি উপগ্রহ চিত্রে মারিউপলে আরো একটি গণকবরের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে আমেরিকা দাবি করেছে।

রাশিয়া দাবি করেছে, মারিউপল এখন তাদের দখলে। রাশিয়ার সেনা পরবর্তী লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। মারিউপলের ইউক্রেনীয় প্রশাসনের দাবি, সেখান থেকে বেসামরিক মানুষের মৃতদেহ সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে রাশিয়ার সেনা। বহু বেসামরিক মানুষের দেহ ইতিমধ্যেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। অন্যদিকে, উপগ্রহ চিত্রে একটি কবরস্থানের ছবি উঠে এসেছে। সেখানে নতুন তৈরি কয়েক হাজার মানুষের কবরের চিহ্ন মিলেছে বলে আমেরিকা জানিয়েছে।

এদিকে ইউক্রেনের সেনা প্রধানের গুরুত্বপূর্ণ সহকারি শুক্রবার জানিয়েছেন, দনবাস অঞ্চলের দনেৎস্কে ৪২টি গ্রাম রাশিয়ার হাতে চলে গেছে। দেশের জাতীয় টেলিভিশনে তিনি এই কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। একইসঙ্গে তার দাবি, ৪২টি গ্রাম রাশিয়ার সেনা দখল করলেও ইউক্রেনের সেনা তা পুনর্দখলের জন্য মরিয়া লড়াই চালাচ্ছে। যে কোনো সময় তা ফের ইউক্রেনের হাতে চলে আসবে। রাশিয়া অবশ্য এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি।

ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে নতুন পদক্ষেপের পরিকল্পনার জন্য জার্মানিতে আসার কথা মার্কিন সেনাপ্রধানের। সেখানে ইউরোপ-সহ একাধিক দেশের সামরিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে তার বৈঠক করার কথা। ফ্রাঙ্কফুর্টের কাছে একটি সামরিক বেসে এই বৈঠক হওয়ার কথা। আমেরিকা জানিয়েছে, এই মুহূর্তে ইউক্রেনের পরিস্থিতি কী তা খতিয়ে দেখে তাদের আর কীভাবে সাহায্য করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হবে। কোনো কোনো মহলের ধারণা, সরাসরি ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়েও ওই বৈঠকে আলোচনা হতে পারে।

আমেরিকা জানিয়েছে, দ্রুত ইউক্রেনে ‘ঘোস্ট’ ড্রোন পাঠানো হবে। এই ড্রোনগুলি মাটির অনেকটা উপর থেকে কাজ করতে পারে। সাধারণত, ড্রোন যে উচ্চতা থেকে কাজ করে, তা মাটি থেকে দেখা যায়। ফলে ড্রোন এলে মাটিতে থাকা সেনা সতর্ক হয়ে যায়। আমেরিকা যে ড্রোন পাঠানোর কথা বলেছে, তা এমন উচ্চতা থেকে কাজ করতে পারে, যা সহজে নজরে পড়ার কথা নয়। সে কারণেই একে ভূত ড্রোন বলা হচ্ছে। এই ড্রোনের সাহায্যে একদিকে যেমন নজরদারি চালানো যায়, তেমনই প্রতিপক্ষের উপর আক্রমণও চালানো যায়। নতুন ড্রোন চলতি যুদ্ধে নতুন মাত্রা দেবে বলে মনে করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা। ইউক্রেনের জন্য অ্যামেরিকা এই ড্রোন নতুন করে ডিজাইন করেছে বলে মার্কিন সামরিক বিভাগের দাবি।

জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ইউক্রেনের যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এবং এখনো যেভাবে প্রতিদিন একেকটি শহর ধ্বংস হচ্ছে, তাতে প্রতি সপ্তাহে তাদের সাত বিলিয়ন ইউরো প্রয়োজন। এই পরিমাণ অর্থ ছাড়া ইউক্রেনকে নতুন করে গড়ে তোলা অসম্ভব। আমেরিকা এবং জার্মানি অবশ্য ইতিমধ্যেই আরো অর্থ মঞ্জুর করেছে ইউক্রেনের জন্য। কিছুদিন আগেই আমেরিকা ইউক্রেনে ৮০০ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র পাঠানোর কথা বলেছিল। এবার তারা আরো ৮০০ মিলিয়ন ডলার সাহায্যের কথা জানিয়েছে। ওই অর্থ দিয়ে ইউক্রেনকে আরো সামরিক সাহায্য দেওয়া হবে। জার্মানি ইউক্রেনের জন্য ৩৭ মিলিয়ন ইউরো ঘোষণা করেছে। ওই অর্থে ধসে যাওয়া বাড়ি, ভবনগুলোর সংস্কার করা হবে। বেশ খানিকটা অর্থ খরচ হবে ভেঙে যাওয়া পাওয়ারগ্রিড সারানোর জন্য। সূত্র:ডিডাব্লিউ রয়টার্স, এপি, এএফপি

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.