বিশ্বে করোনা শনাক্ত কমলেও বেড়েছে মৃত্যু

চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। তবে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় সারাবিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে প্রায় সোয়া ১০ লাখে।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং, যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া ও হাঙ্গেরি। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪৭ কোটি ১৯ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬১ লাখ ৪ হাজার।

মঙ্গলবার (২২ মার্চ) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাবিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩ হাজার ২৭৯ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪০০ জন। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬১ লাখ ৪ হাজার ৪২০ জনে।

একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ লাখ ৩২ হাজার ৮২৯ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ১ লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭ কোটি ১৯ লাখ ২৫ হাজার ৯১০ জনে।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৯ হাজার ১৬৯ জন এবং মারা গেছেন ৩২৯ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯৫ লাখ ৮২ হাজার ৮১৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১২ হাজার ৭৫৭ জন মারা গেছেন।

অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪০৯ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২৮ হাজার ৭০৯ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৭৬ লাখ ১১ হাজার ৪০১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৯০১ জনের।

গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৫৭৫ জন এবং মারা গেছেন ২২২ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮ কোটি ১৪ লাখ ৪১ হাজার ২ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৯ লাখ ৯৮ হাজার ৫১৪ জন মারা গেছেন।

এছাড়া জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৮২ হাজার ৯৩৯ জন এবং মারা গেছেন ১০৯ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৮৮ লাখ ৬৬ হাজার ২২৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ২৭ হাজার ৫৪১ জন মারা গেছেন।

লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১০২ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১১ হাজার ৩৬৪ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৯৬ লাখ ৪১ হাজার ৮৪৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৫৭ হাজার ৩৬৩ জনের।

করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫৮ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১ হাজার ২৭১ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ৩০ লাখ ১০ হাজার ৬৬১ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ১৬ হাজার ৫৭৪ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৯৩৩ জন এবং মারা গেছেন ৮০ জন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩২ হাজার ৫৭৩ জন এবং মারা গেছেন ১১৯ জন। ইন্দোনেশিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৬৯৯ জন এবং মারা গেছেন ১৫৪ জন।

গত একদিনে ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ১৭৯ জন এবং মারা গেছেন ১৫২ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৪১ লাখ ৬১ হাজার ৩৩৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪১ হাজার ৮৫ জন মারা গেছেন। গত একদিনে জাপানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ হাজার ১৯৫ জন এবং মারা গেছেন ৭৪ জন।

এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় হাঙ্গেরিতে ১৩৪ জন, ফিলিপাইনে ১৩ জন, হংকংয়ে ২২৩ জন, আর্জেন্টিনায় ১০৫ জন, ইরানে ৫২ জন, মালয়েশিয়ায় ৬৩ জন, চিলিতে ৯৮ জন এবং থাইল্যান্ডে ৮৮ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ২০ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ২২ হাজার ৯২ জনের।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.