ইউক্রেন ছেড়েছেন ১০ লক্ষাধিক মানুষ: জাতিসংঘ

ইউক্রেনের একাধিক শহরে লড়াই আরো তীব্র হয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহে ইউক্রেন ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন দশ লাখেরও বেশি মানুষ। এদিকে ইউরোপ এত বড় শরণার্থী সংকট আগে দেখেনি। এমনই মনে করছে জাতিসংঘের কর্মকর্তারা।

বুধবার এক রিপোর্টে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, গত সাতদিনে ১০ লাখেরও বেশি ইউক্রেনীয় বাড়ি ছেড়ে আশপাশের দেশে শরণার্থী হিসবে আশ্রয় নিয়েছেন। বাড়িঘর, সম্পত্তি সব হারিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে একটি টুইটও করেছেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি। তিনি লিখেছেন, ‘বহু মানুষ এখনো ইউক্রেনে আটকে আছেন। বন্দুকের আওয়াজ এবার বন্ধ হোক। আটকে থাকা মানুষদের কাছে সাহায্য পৌঁছে দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।’

লড়াই বন্ধ হওয়ার দাবি উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না। বুধবার থেকে লড়াই আরো তীব্র হয়েছে। খারকিভ, মারিউপলে প্রবল বোমাবৃষ্টি করছে রাশিয়া। একইসঙ্গে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষেপণাস্ত্র। পাল্টা জবাব দিচ্ছে ইউক্রেনও। মারিউপলের মেয়র জানিয়েছেন, বুধবারের হামলায় শতাধিক মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা তিনি করছেন। এর মধ্যে সাধারণ মানুষের সংখ্যাই বেশি।

খেরসনের মেয়র জানিয়েছেন, তার শহর এখন সম্পূর্ণভাবে রাশিয়ার সেনার দখলে। কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গোটা শহর। এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত সংস্থা জানিয়েছে, লড়াইয়ে এখনো পর্যন্ত ৭৫২ জনের মৃত্যুর তথ্য তাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। সাড়ে পাঁচশ জন আহত। তবে বাস্তবে সংখ্যাটি আরো অনেক বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।

রাশিয়াও এই প্রথম স্বীকার করেছে যে, লড়াইয়ে তাদের সেনাও নিহত হয়েছে। সব মিলিয়ে তাদের ৪৯৮ জন সেনা নিহত হয়েছে বলে রাশিয়া জানিয়েছে।

লড়াই তীব্র হচ্ছে। কিয়েভেও আক্রমণ আগের চেয়ে অনেক বাড়িয়েছে রাশিয়া। তারইমধ্যে বুধবার জাতিসংঘের জেনারেল অ্যাসেম্বলি বা সাধারণ সভা রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব এনেছে। ১৯৯৭ সালের পর এই প্রথম আপৎকালীন সাধারণ সভার ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেখানে ভোটাভুটির মাধ্যমে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়। তবে নিরাপত্তা পরিষদে এমন প্রস্তাব আনা যায়নি। কারণ সেখানে অন্যতম স্থায়ী সদস্য রাশিয়া। আন্তর্জাতিক আদালতেও বুধবার ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা নিয়ে শুনানি শুরু হয়েছে। সেখানে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তোলা হয়েছে।

লড়াই তীব্র হলেও বেলারুশে ফের বৈঠকে বসতে পারেন রাশিয়া এবং ইউক্রেনের প্রতিনিধি। দউিজনই রওনা হয়েছেন বেলারুশের উদ্দেশে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ফের আর্জি জানিয়েছেন, লড়াই বন্ধ করে আলোচনার জন্য। একই সঙ্গে লড়াই এবং আলোচনা চলতে পারে না বলে দাবি করেছেন তিনি। তবে রাশিয়া হামলা বন্ধ করেনি। সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এপি, এএফপি, বিবিসি

 

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.