‘ইন্টারনেটকে সাশ্রয়ী করতে সরঞ্জামে ভ্যাট কমানোর দাবি’

দেশ ডিজিটাল হচ্ছে, ইন্টারনেট সেবাও বাড়ছে। কিন্তু অ্যাকটিভ শেয়ারিংয়ের সুযোগ না থাকা, সেবায় ব্যবহৃত রাউটার, মডেম, ক্যাবল ইত্যাদির মত ছোট সরঞ্জামের উপর আরোপিত উচ্চ ভ্যাট ইত্যাদির কারণে এখনও গ্রাহকদের কাছে ইন্টারনেট সহজলভ্য নয়। ইন্টারনেট সরবরাহ ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কমানো গেলে গ্রাহকদের কাছে আরও সাশ্রয়ী মূল্যে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছানো সম্ভব।

বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত আধুনিক যোগাযোগ, নেটওয়ার্কিং এবং বিপিও বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম বৈঠকে এ কথা বলেন এফবিসিসিআই’র পরিচালক ও কমিটির ডিরেক্টর ইন চার্জ সৈয়দ সাদাত আলমাস কবির।

তিনি বলেন, দেশে অ্যাকটিভ শেয়ারিং বা কার্যকর বন্টনের অনুমতি নেই। ইন্টারনেট সরবরাহ খরচ তাই অনেক বেশি। উপরন্তু সরবরাহ সরঞ্জামগুলোর উপর উচ্চ ভ্যাট। এসব কারণে গ্রাহকদের এখনও উচ্চ মূল্যে কিনতে হচ্ছে ইন্টারনেট। এ অবস্থায় অ্যাকটিভ শেয়ারিং এর অনুমতি পেলে সরবরাহ খরচ অনেক কমে আসবে। এছাড়া দেশে সর্বত্র ইন্টারনেট পৌঁছানোর একটা আবকাঠামো তৈরি হচ্ছে এখন। এ সময়ে ইন্টারনেট সরবরাহ সরঞ্জামগুলোর উপর ভ্যাট কমানো হলে সাশ্রয়ী মূল্যে ইন্টারনেট পৌঁছানো সম্ভব হবে দেশের সব অঞ্চলে। সরকারের রাজস্ব বাড়বে।

আউটসোর্সিং প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মত একটি দেশে বিপিও (বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং) অত্যন্ত জরুরি। গার্মেন্টস খাতের মত এ খাতেরও ব্যাপক প্রসার সম্ভব এদেশে। এজন্য বিপিও প্রসার বাড়াতে হবে। সরকারের যেসকল সেবায় আউটসোর্সিং করার সুযোগ আছে সেগুলো শনাক্ত করে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দিতে বিপিও কোম্পানিগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা গেলে আউটসোর্সিং এ নারী অংশগ্রহণ বাড়বে। তাদের কর্মসংস্থান হবে। সরকারও উপকৃত হবে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমান শরীফ। তিনি বলেন, ইন্টারনেট খরচ কমানোর পাশাপাশি এর মান নিশ্চিত করা জরুরি। শুধু ঢাকার ভেতরে নয়, এর বাইরেও যাতে শক্তিশালী ইন্টারনেট পৌঁছায় সেদিকে নজর দিতে হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার। দেশের কল সেন্টারগুলোতে আমাদের ছেলেমেয়েদের কাজ করার সুযোগ আছে। এজন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে হবে।

বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি এম এ মোমেন। তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোতে ব্যবসা বাণিজ্যে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার অনেক দূর এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাও প্রস্তুত। প্রয়োজনীয় জনবল আছে আমাদের। সরকারি নীতি সহায়তা পেলে বাংলাদেশও এখাতে দ্রুত এগিয়ে যাবে।

কমিটির সদস্য ও (বিটিআরসি)’ মহাপরিচালক ব্রিগ. জে. মো. নাসিম পারভেজ জানান, ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ সেবার সরঞ্জাম ব্যবহার ও এর খরচ কমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতন্ত্র লাইসেন্স নিয়ে নয়, পুরো সেক্টরকে উপস্থাপনের মাধ্যমে কাজ করা উচিত। এতে দেশে ইন্ডাস্ট্রির প্রসার হবে, সরকারও লাভবান হবে।

বৈঠকে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য) এর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তারা জানান, সরকারের সাথে কাজ করতে চায় বাক্য। সরকারের অনেক সেবা আছে যেখানে আউটসোর্সিং এর সুযোগ আছে দেশের ছেলেমেয়েদের। এ সময় বিপিও খাতকে পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান তারা।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.