সিনহা হত্যা: আদালতে ১৫ আসামি

টেকনাফে পুলিশের গুলিতে নিহত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার ১৫ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।

সোমবার (৩১ জানুয়ারি) কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন। দুপুর ২টার দিকে কারাগার থেকে আসামিদের আদালতে আনা হয়। আসামিরা হলেন- বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, দেহরক্ষী রুবেল শর্মা, বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের বরখাস্ত উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, বরখাস্ত কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন, বরখাস্ত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, বরখাস্ত কনস্টেবল সাগর দেব, বরখাস্ত এপিবিএনের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহজাহান, বরখাস্ত কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, টেকনাফ থানায় পুলিশের করা মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।

আসামিদের আদালতের হাজির করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন কক্সবাজার দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম। আদালতে হাজির হয়েছেন মামলার বাদী সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস। রায়কে কেন্দ্র করে আদালত প্রাঙ্গণে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আদালতে ঢুকতে পারেননি আসামিদের স্বজনরা। বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন তারা।

গত ২০২১ সালের ২৭ জুন সব আসামির উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. ইসমাইল মামলার অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। ওইদিন সকল আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। এরপর গত ২৩ অগাস্ট মামলার বাদী অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহার বড়বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন আদালত। এ মামলায় মোট ৬৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। মামলার অভিযোগপত্রে তালিকাভুক্ত মোট ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে আদালতে ৬৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এই ৬৫ জনের মধ্যে ৯ জন সাক্ষী ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। সর্বশেষ সাক্ষ্য দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম। ১২ জানুয়ারি এ মামলার দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল আদালত রায়ের জন্য আজকের দিন ঠিক করেন।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় দুটি এবং রামু থানায় একটি মামলা করে। সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান এবং মাদক আইনে এসব মামলা হয়। টেকনাফ থানায় করা দুই মামলায় নিহত সিনহার সঙ্গী সাইদুল ইসলাম সিফাতকে আসামি করা হয়। আর রামু থানায় মাদক আইনে করা মামলায় আসামি করা হয় নিহত সিনহার অপর সফরসঙ্গী শিপ্রা দেবনাথকে।

২০২০ সালের ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কক্সবাজার আদালতে মামলা করেন। এতে প্রধান আসামি করা হয় টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে। ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। একইদিন পুলিশের করা মামলা তিনটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। ১৫ আসামির মধ্যে ওসি প্রদীপসহ তিনজন ছাড়া বাকি ১২ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.