৪ হাফ সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪০১

মাউন্ট মঙ্গুনুইতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৩ রানের লিড পেয়েছে বাংলাদেশ। কিউইদের করা ৩২৮ রানের জবাব চার হাফ সেঞ্চুরিতে দিয়েছে মুমিনুল হকের দল। ম্যাচের তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছয় উইকেটে ৪০১ রান।

আগের দিন দুর্দান্ত ব্যাটিং করা বাংলাদেশের তৃতীয় দিন শুরু হয় ২ উইকেটে ১৭৫ রান নিয়ে। তবে দিনের শুরুটা ভালো হয়নি টাইগারদের। দ্বিতীয় দিন ধৈর্য্যর পরীক্ষায় উতরে গেলেও এদিন ছিলেন বেশ খানিকটা আক্রমণাত্বক এবং অস্থির। আর সেটিই কাল হয়ে দাঁড়ায় মাহমুদুল হাসান জয়ের জন্য। তাতে প্রথম ঘণ্টা এবং নতুন বলে উইকেট না হারানোর চ্যালেঞ্জে ব্যর্থ বাংলাদেশ।

দিনের তৃতীয় ওভারেই আউট হয়েছেন জয়। নেইল ওয়েগনারের বাইরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে গালিতে থাকা হেনরি নিকোলসের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। তাতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে দুই শতাধিক বল খেলা ওপেনারের ইনিংস শেষ হয় ২২৮ বলে ৭৮ রান করে। ধীরগতিতে ব্যাটিং করলেও খুব একটা স্বস্তিতে ছিলেন না মুমিনুল হক।

ওয়েগনারের কথা ২৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। সাজঘরের দিকে ফিরেও যাচ্ছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তবে মুমিনুলের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয় নো বল রিপ্লেতে দেখা যায় ওয়েগনারের পায়ের কোনো অংশই লাইনের ভেতর ছিল না। তাতে থার্ড আম্পায়ার নো বলের সঙ্কেত দিলে ৯ রানে জীবন পান অভিজ্ঞ এই ব্যাটার।

বেশ খানিকটা সময় ব্যাটিং করলেও রান তোলায় মুশফিকুর রহিম ছিলেন মন্থর। সাবধানী ব্যাটিং করলেও মধ্যাহৃ বিরতিতে যাওয়ার ২০ মিনিট আগে আউট হয়েছেন তিনি। ট্রেন্ট বোল্টের ১৩০ কিলোমিটার গতির বলে পরাস্ত হয়ে বোল্ড হয়েছেন ৫৩ বলে ১২ রান করা এই টপ অর্ডার ব্যাটার। এরপর লিটন দাসকে নিয়ে মধ্যাহ্নভোজের বিরতি পর্যন্ত সামাল দেন মুমিনুল। এই দুজনের ব্যাটে ৪ উইকেট হারিয়ে ২২০ রান নিয়ে মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

মধ্যাহৃ বিরতি থেকে ফেরার পর মুমিনুলের দুই একবার এজ হলেও ব্যাট হাতে সাবলীল ছিলেন লিটন দাস। ৫০ রানের জুটি গড়ে প্রথম সেশনে দুই উইকেট হারানোর ধাক্কা সামাল দেন মুমিনুল-লিটন। শুরু থেকেই ধীরগতির ব্যাটিং করা মুমিনুল হক বোল্টের ২৩তম ওভারের শেষ বলে কভার ড্রাইভ করে চার মেরে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন।

এরপর লিটনের সঙ্গে শতরানের জুটি গড়েন মুমিনুল। এদিন হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন মুমিনুলকে দারুণভাবে সঙ্গ দেয়া লিটন। গত বছর সাদা পোশাকের ক্রিকেটে দুর্দান্ত এক বছর পার করা লিটনের নতুন বছরের শুরুটাও হলো দারুণভাবে। শুরু থেকেই সাবলীয় ব্যাটিং করা এই উইকেটকিপার ব্যাটার হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ৯৩ বলে। পুরো ইনিংসে খেলেছেন চোখ জুড়ানো সব শট।

প্রথম সেশনে জয় এবং মুশফিককে হারালেও দ্বিতীয় সেশনটা দারুণ কেটেছে বাংলাদেশের। যেখানে ২৬ ওভার ব্যাটিং করে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৮৭ রান তুলেছেন লিটন-মুমিনুল। চা বিরতি থেকে ফিরে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে লিড নেয় বাংলাদেশ। পরে ব্যাটিং করে এশিয়ার বাইরে প্রথমবার লিড নিলো টাইগাররা। দিনের শুরুতে মুমিনুলকে খানিকটা অস্বস্তিতে দেখা গেলেও সময় যত গড়িয়েছে ততই নিজের জড়তা কাটিয়ে উঠেছেন মুমিনুল।

তৃতীয় সেশনের ব্যাটিংয়ে দেখা গেলো সেটার পুরো চিত্র। রাচিন রবীন্দ্রকে কখনও ফ্লিক করে আবার কখনও ড্রাইভ করে বাউন্ডারি আদায় করে দলের লিড বাড়িয়েছেন তিনি। এদিকে নান্দনিক সব শটে তৃতীয় সেশনেও দুর্দান্ত লিটন। বাংলাদেশ লিড নেয়ার পর তাদের দুজনে জুটি গড়িয়েছে ১৫০ রানের ঘরে।

১৫৮ রানে গড়া মুমিনুল-লিটনের জুটি ভেঙেছেন বোল্ট। মুমিনুল হককে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন তিনি। ২৪৪ বল খেলা বাংলাদেশ অধিনায়ক করেন ৮৮ রান। এরপর লিটনকেও সেঞ্চুরি বঞ্চিত করেন বোল্ট। কিউই এই পেসারের বলে উইকেটরক্ষকের কাছে ক্যাচ তুলে দেন লিটন। ১৭৭ বলে ৮৬ রান করে থেমেছেন বাংলাদেশি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। এরপর আর কোনো বিপত্তি ঘটতে দেননি ইয়াসির আলী রাব্বি ও মেহেদী হাসান মিরাজ। ইয়াসির ১১ ও মিরাজ ২০ রানে থেকে চতুর্থ দিন শুরু করবেন

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.