কনওয়ের সেঞ্চুরির পরও স্বস্তিতে বাংলাদেশ

লাইন, লেন্থ বজায় রেখে সকালের শুরুটা দুর্দান্ত করেছিল বাংলাদেশ। আঁটসাঁট বোলিংয়ে শুরুর ঘণ্টায় নিউজিল্যান্ডকে চেপে ধরলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ছন্দ হারাতে থাকে বাংলাদেশের বোলাররা। এরপরের গল্পটা কেবলই কনওয়ের। দলের বিপর্যয়ে মাটি কামড়ে উইকেটে পড়ে থাকা বাঁহাতি এই ব্যাটার সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে উল্টো বাংলাদেশকে অস্বস্তিতে রাখেন। তবে মাউন্ট মঙ্গুনুইতে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৫৮ রান নিয়ে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছিল স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনেই তারা অল আউট হয়েছে ৩২৮ রানে।

মাউন্ট মঙ্গানুইতে টস জিতে বোলিং করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন বাংলাদেশের দুই পেসার তাসকিন আহমেদ এবং শরিফুল ইসলাম। তাদের দুজনের সুইং সামলাতে বেশ খানকিটা হিমশিম খেতে হচ্ছিলো টম লাথাম এবং উইল ইয়ংকে। ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই বাংলাদেশকে ব্রেুক থ্রু এনে দেন শরিফুল। বাঁহাতি এই পেসারের ফুল লেংথের বল খেলতে গিয়ে ইন সাইড এজ হয়ে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন লাথাম। বাঁদিকে খানিকটা ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্দান্ত ক্যাচ নিতে ভুল করেন বাংলাদেশের এই উইকেটকিপার। তাতে কেন উইলিয়ামসনের পরিবর্তে অধিনায়ক হিসেবে খেলতে নামা লাথাম আউট হয়েছেন এক রান করে।

এরপর দারুণভাবে জুটি গড়ে তোলেন ডেভন কনওয়ে এবং ইয়ং। যদিও শরিফুল এবং তাসকিনের দারুণ বোলিংয়ের সামনে ধুঁকতে হচ্ছিলো তাদের। কিউইদের ওপর থেকে চাপ খানিকটা কমে যায় এবাদত হোসেন বোলিংয়ে আসলে। ডানহাতি এই পেসার তেমনভাবে চাপ তৈরি করতে না পারায় শুরুতে সাবধানী ব্যাটিং করা কনওয়ে এবং ইয়াং রান তোলায় মনোযোগ দেন। তাতে মধ্যাহৃ বিরতিতে যাওয়ার আগে ১ উইকেটে ৬৬ রান সংগ্রহ করে কিউইরা।

মধ্যাহৃ বিরতি থেকে ফিরে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন কনওয়ে। মেহেদি হাসান মিরাজের বলে মিড উইকেটের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মেরে ১০১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দেয়া ইয়ংও পেয়েছেন হাফ সেঞ্চুরির দেখা। তবে হাফ সেঞ্চুরি করার পর ইনিংস বড় করতে পারেননি ডানহাতি এই ব্যাটার। কনওয়ের সঙ্গ ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন ইয়ং। ৫২ রান করে ডানহাতি এই ওপেনার ফিরলে ভাঙে কনওয়ের সঙ্গে তার ১৩৮ রানের অনবদ্য জুটি। দিনের দ্বিতীয় সেশনের পুরোটায় প্রায় হতাশায় কেটেছে বাংলাদেশের বোলারদের। দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা কনওয়ে চা বিরতি থেকে ফিরে সেঞ্চুরি তুলে নেন। ১৮৬ বলে পেয়েছেন বছরের প্রথম সেঞ্চুরি।

এদিকে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে নামা রস টেলরের শুরুটা রাঙাতে দেননি শরিফুল। বেশ খানিকটা সময় উইকেটে থাকলেও সাদমান ইসলামের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৩১ রানে ফেরেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। টেলর আউট হওয়ার পর সাজঘরে ফিরেছেন সেঞ্চুরি করা কনওয়ে। দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা কনওয়েকে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়েছেন মুমিনুল হক। বাঁহাতি এই স্পিনারের বলে ক্যাচ আউট হয়েছেন ১২২ রান করা কনওয়ে।

শেষ বিকেলের জুটি গড়ার চেষ্টা করলেও এবাদতকে উইকেট দেন টম ব্লান্ডেল। ডানহাতি এই পেসারের বলে বোল্ড আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন ১১ রান করা ব্লান্ডেল। তাতে প্রথম দিনের খেলা শেষে ৫ উইকেটে ২৫৮ রান সংগ্রহ করেছে নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই কিউই শিবিরে আঘাত হানেন টাইগার পেসার শরিফুল ইসলাম। তিনি ৪ রান করা রাচিন রবীন্দ্রকে ফেরান সাদমান ইসলামের ক্যাচ বানিয়ে।

এই টাইগার পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে থার্ড স্লিপে ক্যাচ দেন রবীন্দ্র। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি কাইল জেমিসন। তিনি মেহেদী হাসান মিরাজের বলে লং অনে ধরা পড়েছেন সেই সাদমানের হাতে। এরপর নিজের ৩১তম ওভার করতে এসে জোড়া উইকেট তুলে নিয়েছেন মিরাজ। ৬ রানে টিম সাউদিকে মিড উইকেটে মুমিনুল হকের ক্যাচ বানানোর পর নেইল ওয়েগনারকে শূন্য রানে লিটন দাসের ক্যাচ বানিয়েছেন তিনি।

একপ্রান্ত আগলে রাখা হ্যানরি নিকোলস ব্যক্তিগত ৭৫ রানে মুমিনুল হকের বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে শর্ট থার্ড ম্যান অঞ্চলে ক্যাচ দেন সাদমানের হাতে। এর ফলে ৩২৮ রানে থামে কিউইদের ইনিংস। প্রথম দিন এই ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ার ডেভন কনওয়েকেও ফিরিয়েছিলেন মুমিনুল। এবার প্রথম ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার নিকোলসকেও ফেরালেন তিনি।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.