আয়েশা বিউটি পার্লারের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির মামলা

রাজধানীর ওয়ারী ও বনানীতে ‘আয়েশা’স মেকওভার সেলুন অ্যান্ড স্পা’ পার্লারের দুটি শাখায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৯ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট গোয়েন্দারা।

আজ মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) নিবন্ধন না নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবসা করার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।

ভ্যাট নিরীক্ষা ও গোয়েন্দা অধিদপ্তর সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, একজন গ্রাহকের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ওই গ্রাহক ওই পার্লার থেকে সেবা গ্রহণ করলে তাকে ‘ভুয়া চালানে’ বিল প্রদান করা হয়। পরে তিনি ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরে অভিযোগ দেন।

ভ্যাট গোয়েন্দার উপ-পরিচালক তানভীর আহমেদের নেতৃত্বে একটি দল প্রতিষ্ঠানটির বনানী শাখায় এবং সহকারী পরিচালক আলমগীর হুসেনের নেতৃত্বে আরেকটি দল ওয়ারীর শাখায় অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানের শুরুতে প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষকে ভ্যাটসংক্রান্ত দলিল উপস্থাপনের জন্য অনুরোধ করা হলে তারা ভ্যাট নিবন্ধন নম্বর এবং এ-সংক্রান্ত কোনো দলিল দেখাতে পারেনি। পরবর্তী সময়ে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালিয়ে বাণিজ্যিক দলিল জব্দ করে।

তদন্তে দেখা যায়, আয়েশা’স মেকওভার সেলুন অ্যান্ড স্পা-এর ওয়ারী শাখা ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭৭ লাখ টাকার ব্যবসা করে। প্রতিষ্ঠানটির সূত্রাপুর ভ্যাট সার্কেল অফিসের মাসিক রিটার্নে দেখা যায়, মাত্র ৪৩ হাজার টাকা ভ্যাট পরিশোধ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সেবার বিপরীতে ১১ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে। যথাসময়ে ভ্যাট পরিশোধ না করায় আরও ২ শতাংশ জরিমানার ফলে সুদ আসে ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা।

অপরদিকে, আয়েশা’স মেকওভার সেলুন অ্যান্ড স্পা-এর বনানী শাখা ২০২০ সালে ভালো ব্যবসা করে। তবে গুলশান সার্কেল অফিসে প্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধনের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এখানে ৪ লাখ ১০ হাজার টাকার ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে বলে তদন্তে উল্লেখ করা হয়। এই ফাঁকির ওপর অতিরিক্ত ২ শতাংশ জরিমানার ফলে সুদ বাবদ ভ্যাট আসে ৭৮ হাজার ৫৩৩ টাকা।

এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির বনানী শাখায় ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থাপনা বাবদ ১০ লাখ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এর বিপরীতে কোনো ভ্যাট না দেয়ায় এখানে ফাঁকি হয় ১ লাখ ৩৩ হাজার ৪৩ টাকা। এই ফাঁকির ওপর ২ শতাংশ হারে সুদ প্রযোজ্য হওয়ায় ভ্যাট আসে ১২ হাজার ১৯৬ টাকা।

তদন্তে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটির সর্বমোট অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ ১৬ লাখ ৫৩ হাজার ৯২১ টাকা এবং সুদ বাবদ ২ লাখ ৪৩ হাজার ৭৬১ টাকা। সব মিলিয়ে ফাঁকি দেয়া হয় ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ৬৮২ টাকা।

অর্থসূচক/মৃত্তিকা সাহা/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.