এসএমই ঋণের বড় অংশ বিতরণ হয়েছে উৎপাদনশীল খাতে

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতে ঋণ বিতরণ হয়েছে ৪২ হাজার ৭৫ কোটি টাকা, যা এর আগের প্রান্তিকে বিতরণ করা ঋণের তুলনায় ২৮৬ কোটি টাকা বা শূন্য দশমিক ৬৮ শতাংশ বেশি। আলোচ্য সময়ে সবচেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করা হয়েছে উৎপাদনশীল খাতে, যার পরিমাণ ১৫ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, বিতরণ করা এসব ঋণের মধ্যে প্রস্তুতকারক শিল্পে গিয়েছে ১৫ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা। সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানে নয় হাজার আট কোটি টাকা এবং ব্যবসা উপ-খাতের প্রতিষ্ঠানে ১৭ হাজার ৩৩০ কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে ব্যাংকগুলো।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সিএমএসএমই খাতে ঋণ বিতরণ হয়েছে ৪২ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। ২০২১ সালের এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে সিএমএসএমই খাতে ৪১ হাজার ৭৮৯ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করে ব্যাংকগুলো। আর জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে সিএমএসএমই খাতে ঋণ দেওয়া হয় ৪৪ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা।

সবমিলিয়ে চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে এসএমই ঋণ বিতরণ হয় এক লাখ ২৮ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। ফলে ইতোপূর্বে বিতরণ করা সব ঋণসহ এ খাতে ঋণের মোট স্থিতি দাঁড়ায় দুই লাখ ৪৫ হাজার ৩২৬ কোটি টাকা। ছয় লাখ ৪৩ হাজার ৭২৬ গ্রাহক এ ঋণ পেয়েছেন।

আলোচ্য সময়ে, ২০২১ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এসএমই খাতে নতুন উদ্যোক্তাদের মধ্যে পাঁচ হাজার ৮৪৬ কোটি টাকা ঋণ দেয় ব্যাংকগুলো। পল্লী এলাকার এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বিতরণ করা হয় নয় হাজার ১২৩ কোটি টাকার ঋণ। আলোচিত সময়ে জামানতবিহীন ঋণ ছয় হাজার ২৯৬ কোটি টাকা।

এর মধ্যে কুটির (কটেজ) প্রতিষ্ঠানে ৫৫৬ কোটি টাকা ঋণ দেয় ব্যাংকগুলো। মাইক্রো খাতের প্রতিষ্ঠানে পাঁচ হাজার ২৮০ কোটি টাকা, ক্ষুদ্র শিল্পে ২৪ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা এবং মাঝারি শিল্প খাতে ১১ হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা ঋণ দেয় ব্যাংকগুলো।

তথ্য বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে সিএমএসএমই খাতে বেসরকারি ব্যাংকগুলো বিতরণ করে ২২ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো বিতরণ করে তিন হাজার ২৬১ কোটি টাকা। বিশেষায়িত ব্যাংক বিতরণ করে ৮৩৯ কোটি টাকা। ইসলামিক ব্যাংকগুলো বিতরণ করে ১২ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে ব্যাংকিং খাত থেকে সিএসমএসএমই খাতে ঋণ যায় ৪২ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। এছাড়া লিজিং প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংক বহির্ভূত প্রতিষ্ঠানগুলো (এনবিএফআই) সিএমএসএমই খাতে বিতরণ করে এক হাজার ৪৪২ কোটি টাকা।

নিয়মিত এসএমই ঋণের পাশাপাশি কোভিড-১৯ এর প্রকোপে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র শিল্পের উদ্যোক্তাদের স্বল্প সুদে ঋণ দিতে গত বছরের এপ্রিল থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার একটি প্রণোদনা প্যাকেজের নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই প্যাকেজ থেকে গত জুন পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণ হয় সিএমএসএমই খাতে। গত জুলাই থেকে প্রণোদনার দ্বিতীয় মেয়াদের ঋণ বিতরণ শুরু হয়েছে। এ ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ। তবে এর মধ্যে ৫ শতাংশ ভর্তুকি দেবে সরকার, বাকিটা গ্রাহক পরিশোধ করবে।

অর্থসূচক/মৃত্তিকা সাহা/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.