তিন সন্তান নিয়ে কোথায় যাবে কোহিনুর…?

তিন সন্তান নিয়ে এখন যাবে কোথায় নোয়াখালীর কোহিনুর বেগম? খেয়ে না খেয়ে অর্থভাবে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন এই অসহায় মা। অর্থ অভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সন্তাদের পড়ালেখা।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার নরোত্তমপুর গ্রামের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চাপরাশি বাড়ীর শহীদ উল্লার পুত্র  রিকশা চালক মনির হোসেনের সাথে পাশ্ববর্তী সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা গ্রামের রিকশা চালক আবুল খায়েরের মেয়ে কোহিনুর বেগমের বিয়ে হয় ২০০৮ সালে। বিয়ের সময় রিকশা ক্রয় করার জন্য বাবা আবুল খায়ের জামাইকে ত্রিশ হাজার টাকা দেন। এ টাকা দিয়ে রিকশা ক্রয় করে মনির। দিনভর রিকশা চালিয়ে মনির কোন প্রকার সংসার পরিচালনা করে আসছিল। এরই মাঝে ঘরে আসে ৩ সন্তান। প্রথম সন্তান সাইফুল ইসলাম (৯) তাদের দ্বিতীয় সন্তার মরিয়ম বেগম (৬) তৃতীয়  সন্তান কাউসার হোসেন(৪)। মরিয়ম বজরা নুরানী মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। কোহিনুর ও মনির দম্পতির  প্রথম সন্তান সাইফুল ইসলাম সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা ইসলামীয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের ছাত্র। বর্তমানে পবিত্র কুরআন মজিদের ২২ পারার হাফিজি অধ্যয়নরত অবস্থায় আছে।

এরই মাঝে ২০২০ সালের আগষ্ট মাসে মনির হোসেন কান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মনির হোসেনসহ তারা তিন ভাই ও মা-বাবা বসবাস করতেন আধা শতাংশের ছোট একটি ঘরে। ৪টি চৌকি রাখার মত কোন জায়গা নেই তাদের। তিনটি চৌকিতেই পরিবারটি কোনভাবে কষ্ট করে ঘুমাতো। রাতের বেলায় সময় ভাগাভাগি করে  ঘুমাতো তারা…। এ দিকে  মনির হোসেন মৃত্যুর পর তার বাবা ঘর থেকে বের হওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। বিয়ের সময় কোহিনুরের বাপের বাড়ি থেকে  নিয়ে আসা ৩০ হাজার টাকা নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বলে কোহিনুরকে। কিন্তু ৩ সন্তান নিয়ে কোথায় যাবে এ অসহায় নারী। এ নিয়ে একটি সালিশি বৈঠক বসে। উক্ত বৈঠকে কোহিনুরকে ১ বছরের মধ্যে ঘর ছেড়ে দেয়ার জন্য সময় বেধেঁ দেয়। কিন্তু প্রায় ১ বছর ঘনিয়ে আসলে ও কোহিনুর কোনো কিছুই করতে পারিনি। সময় পার হওয়ায় আগেই তাকে নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘর ছাড়তে হবে বলে মনিরের বাবা আগাম নোটিশ দেন।

বিপদ যেন পিছু ছাড়ছেনা কোহিনুরের। এক সময় অন্যের বাড়িতে কাজ করে ২ বেলা ২ মুঠো ভাত খেয়ে সন্তানদের নিয়ে জীবন-যাপন করছিলেন এই অসহায় মা। কিন্তু সম্প্রতি শ্বাসকষ্ট (অ্যাজমা ) রোগে আক্রান্ত হয় কোহিনুর। এতে কাজ করতে পারছেন না তিনি। বর্তমানে ২ বেলা ২ মুঠো ভাত জোগাড় করা তার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ছে। এ দিকে প্রতিমাসে ছেলের জন্য ২ হাজার টাকা দিতে  হয় খাওয়া ও পড়াশোনার জন্য। টাকার অভাবে সেটিও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ।

অর্থসূচক/আরএমএস/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.