রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হলেও ‘ওমিক্রন’ নিয়ে দুশ্চিন্তা

সদ্য সমাপ্ত নভেম্বর মাসে ৪০৪ কোটি ১৪ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা) টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ৩৪ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা, যা গত বছরের নভেম্বরের চেয়ে ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি।

বৃহস্পতিবার (০২ ডিসেম্বর) রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।

রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হলেও করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ নিয়ে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তা। রফতানিকারকরা বলছেন, যদি করোনার এই নতুন ধরন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে রফতানি বাণিজ্যেও আগের মতো নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তারা আশংকা করছেন, যদি ওমিক্রন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে আমাদের রফতানি আবার থমকে যাবে। আর যদি সেটা না হয়, তাহলে এই ইতিবাচক ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) প্রায় ২০ বিলিয়ন (১ হাজার ৯৭৯ কোটি) ডলার রফতানি আয় দেশে এসেছে। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৪ দশমিক ২৯ শতাংশ বেশি। আর নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ। এই পাঁচ মাসে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৭৪৭ কোটি ডলার। এ হিসাবেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ।

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, জুলাই-নভেম্বর সময়ে তৈরি পোশাক ছাড়াও কৃষি প্রক্রিয়াজাত, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হিমায়িত খাদ্য, হোম টেক্সটাইল, প্রকৌশল পণ্য ও হস্তশিল্প রফতানি বেড়েছে। ফলে সামগ্রিক পণ্য রফতানিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তবে পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি আয় কমেছে সাড়ে ১৭ শতাংশ।

মোট রফতানি আয়ের মধ্যে ১ হাজার ৫৮৫ কোটি ডলার এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এই আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২২ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া ৫৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত, ৫৬ কোটি ৩৬ লাখ ডলারের হোম টেক্সটাইল, ৪৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলার চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ৪৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলার পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি হয়েছে।

মোট রফতানি আয়ের মধ্যে ৮০ দশমিক ১১ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক থেকে। এরমধ্যে নিট পোশাক থেকে এসেছে ৮৯৮ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২৬ শতাংশ। লক্ষ্যের চেয়ে বেশি এসেছে ১৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ওভেন পোশাক থেকে এসেছে ৬৮৭ কোটি ডলার। আয় বেড়েছে ১৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে রফতানি আয়ের মোট লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৪৩ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাত থেকে আয়ের লক্ষ্য ধরা আছে ৩৫ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে পণ্য রফতনি থেকে ৩৮ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার আয় করে বাংলাদেশ, যা ছিল আগের বছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩ হাজার ৩৬৭ কোটি (৩৩.৬৭ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রফতনি হয়, যা ছিল আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.