‘ব্যাংক এক্সপোজার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি’

পুঁজিবাজারে তফসিলি ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ (Capital Market Exposure/Bank Exposure) হিসাবায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক। তাই সুকুকসহ সব ধরনের বন্ডে বিনিয়োগ ব্যাংক এক্সপোজারের বাইরে রাখা হবে মর্মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তা বস্তুনিষ্ঠ নয়।
কথোপোকথনঃ

বাংলাদেশ ব্যাংক এক সংবাদ বিজ্ঞাপ্তিতে এমন দাবি করেছে।

আজ বুধবার (০১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে সব গণমাধ্যমে এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) পুঁজিবাজার ইস্যুতে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিএসইসির কমিশনার প্রফেসর ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ এক অনানুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানান, ব্যাংক এক্সপোজারসহ বেশ কিছু ইস্যুতে দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। সব ধরনের বন্ডের বিনিয়োগকে ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপোজার থেকে বাইরে রাখার বিষয়ে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিছুদিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। এছাড়া বাজারমূল্যের পরিবর্তে ক্রয়মূল্যে এক্সপোজার হিসাবায়নের বিষয়েও বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এই ব্রিফিংয়ের আলোকে অর্থসূচকসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। কিন্তু আজ বাংলাদেশ ব্যাংক আলোচিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দাবি করেছে, এক্সপোজার সংক্রান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি মঙ্গলবারের বৈঠকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এ, কে, এম সাজেদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে পূর্বনির্ধারিত সভা বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিএসইসি-এর উদ্যোগে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড গঠনের ফলে তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সৃষ্ট জটিলতা নিরসন এবং পুঞ্জিভূত লোকসান বিদ্যমান থাকলেও সংশ্লিষ্ট বছরের মুনাফা হতে নগদ লভ্যাংশ বিতরণের বিষয়ে আলোচনা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, সভায় ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর ৩৫(১)(গ) ধারা ও ২২ ধারা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ এর ১০ ধারার বিষয়গুলো ব্যাখ্যাপূর্বক ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের অদাবীকৃত তহবিল স্থানান্তরের এবং পুঞ্জিভূত লোকসান বিদ্যমান থাকলেও সংশ্লিষ্ট বছরের মুনাফা হতে নগদ লভ্যাংশ বিতরণের বিষয়টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে আইনসম্মত নয় বলে বিএসইসি প্রতিনিধিদলকে অবহিত করা হয় এবং এতদ্বিষয়ে বিএসইসি-এর নোটিফিকেশনে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনয়নের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। এছাড়াও সভায় পুঁজিবাজারে তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের বিনিয়োগ সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ এ পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের বিনিয়োগের বিষয়ে বিদ্যমান কতিপয় আইনি সীমাবদ্ধতার বিষয়েও বিএসইসি প্রতিনিধি দলকে স্পষ্টীকরণ করা হয়; তবে এ সকল বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.