ইংলিশ চ্যানেলে নৌকাডুবে ২৭ অভিবাসীর মৃত্যু

ফ্রান্সের বন্দরনগরী কালাইয়ের কাছে ইংলিশ চ্যানেলে নৌকা ডুবে যুক্তরাজ্যগামী অন্তত ২৭ জন অভিবাসী মারা গেছেন। এর মধ্যে ৫ নারী ও একটি শিশু রয়েছে। যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষ ইংলিশ চ্যানেলে নৌযান এবং বিমানের মাধ্যমে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) বিবিসি জানায়, ফ্রান্সের কালাই উপকূলের কাছে বুধবার সন্ধ্যার পর নৌকাটি ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে থাকা অভিবাসন প্রত্যাশীরা মানবপাচারকারী চক্রের মাধ্যমে ফ্রান্স থেকে অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে যাচ্ছিল। ২০১৪ সালের পর থেকে এটি এই চ্যানেলে দুর্ঘটনায় ‌‘সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির’ ঘটনা বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন জানান, নৌকাটিতে ৩৩ জন অভিবাসী ছিলনে। এর মধ্যে দুই জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। ফ্রান্সের পুলিশ এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে ৪জন সন্দেহভাজন মানবপাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। খবর- বিবিসির

ফরাসি প্রধানমন্ত্রী জ্যঁ ক্যাসটেক্স নৌকাডুবির এ ঘটনাকে ‘মর্মান্তিক’ বলে উল্লেখ করেছেন। মারা যাওয়া অভিবাসীরা অবৈধ মানবপাচারকারীদের শিকার হয়েছেন বলেও জানান তিনি। দেশটির প্রধানমন্ত্রী এ ঘটনা নিয়ে একটি জরুরি বৈঠকে বসবেন বলে জানিয়েছেন তার মুখপাত্র।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার ফরাসি উপকূলে কয়েকজন মানুষকে ভাসতে দেখার পর একটি মাছ ধরার নৌকা বিপদ সংকেত বাজায়। বহু অভিবাসী এখনও নিখোঁজ রয়েছে এবং অনেকে আহত হয়েছে।

হোওট দ্য ফ্রান্স বন্দরের মোবিলিটি, পরিবহন কাঠামো এবং বন্দর বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং একটি শহরের মেয়র জানিয়েছেন, ২৪টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সঙ্গে কয়েকজনকে জীবীতও পাওয়া গেছে।

এদিকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এতে খুবই ‘আতঙ্কিত’ হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন। এ সময় তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য মানবপাচারকারী চক্রকে থামাতে কোনো ধরনের ছাড় দেবে না। তিনি এ বিষয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই একটি বৈঠক করতে যাচ্ছেন বলেও জানা গেছে।

গত ১১ নভেম্বর একদিনে সর্বাধিক এক হাজার ১৮৫ জন অবৈধভাবে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেয়। এ বছর ছোট বড় মিলিয়ে ১৭৯টি অবৈধ নৌকা জব্দ করেছে যুক্তরাজ্য সরকার। এ বছর এ পর্যন্ত ২৫ হাজার ৭০০ জনের বেশি মানুষ ইংলিশ চ্যানেল হয়ে যুক্তরাজ্যে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছে। গত বছরের চেয়ে যেটি তিনগুণের বেশি।

২০১৪ সাল থেকে দুর্ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করে আসছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)। মানবপাচার নিয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সরকারের মধ্যে শীতল সম্পর্ক রয়েছে। যথারীতি এ যাত্রায়ও একে অপরকে দোষারোপের প্রবণতা দেখা গেছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.