প্রশ্নফাঁস: ৫ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল হতে পারে

ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির আওতায় সমন্বিত পাঁচ ব্যাংকের অফিসার (ক্যাশ) নিয়োগের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস বিষয়ে তদন্ত করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রশ্নফাঁস বিষয়টি প্রমাণিত হলে উল্লেখিত পরীক্ষা বাতিলের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক নির্বাহী পরিচালক।

বুধবার (১০ নভেম্বর) ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, প্রশ্নফাঁস হওয়া গুরুতর অপরাধ। বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে তদন্ত করছে। এটি প্রামাণিত হলে অনুষ্ঠিত ওই পাঁচ ব্যাংকের অফিসার (ক্যাশ) নিয়োগের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা বাতিলের সম্ভাবনা রয়েছে।

শনিবার (৬ নভেম্বর) বিকেল তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত পাঁচ ব্যাংকের অফিসার (ক্যাশ) নিয়োগের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মোট এক হাজার ৫১১টি পদের বিপরীতে অনুষ্ঠিত এ পরীক্ষায় অংশ নেন এক লাখ ১৬ হাজার ৪২৭ জন চাকরিপ্রত্যাশী। তবে চাকরিপ্রত্যাশীদের অভিযোগ, পরীক্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ১০০টি প্রশ্নের প্রিন্ট করা উত্তরপত্র (বাংলা-ইংরেজি-সাধাণজ্ঞান) ফেসবুকে পাওয়া গেছে। সুতরাং প্রশ্ন আগেই ফাঁস হয়েছে। এটা না হলে পরীক্ষা চারটার সময় শেষ হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ১০০টি প্রশ্নের সঠিক উত্তর সামাজিক মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব নয়।

এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশ্নফাঁসে জড়িত একটি চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। তারা জানিয়েছে, তাদের তিনজনই সরকারি বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তা। তারা পরপর চারটি ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে। ডিবির প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে আরও অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। চক্রটি এ পর্যন্ত প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ৬০ কোটি টাকা।

ডিবি জানায়, গ্রেফতার হওয়া সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ পরীক্ষা আয়োজনে দায়িত্বপ্রাপ্ত আহছানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজির আইসিটি বিভাগ থেকেই প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে।

এদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়টিকে কেন কালো তালিকাভুক্ত করা হবে না, তা জানতে চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে থাকা ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি।

বুধবার (১০ নভেম্বর) এ ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রশ্নপ্রত্রসহ সব কিছুর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে। ফলে এ বিষয়ে দায়িত্বে অবহেলাজনিত কোনো কারণ আছে কিনা সে বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। তাদেও ব্যাখ্যার উপর ভিত্তি করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে এই ঘটনায় আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কালো তালিকাভুক্ত হলে সামনের একাধিক পরীক্ষা গ্রহনের তারিখ পরিবর্তন হবে। কারণ, একাধিক সরকারি ব্যাংকের চাকরি পরীক্ষা গ্রহণের দায়িত্ব পেয়েছে বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়টি। ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি টেন্ডারের মাধ্যমে পরীক্ষা গ্রহনের দায়িত্ব পায় আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.