প্রশ্নফাঁস: আহছানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

সরকারি ব্যাংকে চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ঘটনায় কেন কালো তালিকাভুক্ত করা হবে না, তা জানতে চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে থাকা ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি। পাশাপাশি প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় পরীক্ষা বাতিলের বিষয়েও ভাবছে।

আজ বুধবার (১০ নভেম্বর) এ ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রশ্নপ্রত্রসহ সব কিছুর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে। ফলে এ বিষয়ে দায়িত্বে অবহেলাজনিত কোনো কারণ আছে কিনা সে বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। তাদেও ব্যাখ্যার উপর ভিত্তি করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে এই ঘটনায় আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কালো তালিকাভুক্ত হলে সামনের একাধিক পরীক্ষা গ্রহনের তারিখ পরিবর্তন হবে। কারণ, একাধিক সরকারি ব্যাংকের চাকরি পরীক্ষা গ্রহণের দায়িত্ব পেয়েছে বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়টি। ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি টেন্ডারের মাধ্যমে পরীক্ষা গ্রহনের দায়িত্ব পায় আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার বাংলাদেশ ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির আওতায় পাঁচ ব্যাংকের অফিসার (ক্যাশ) নিয়োগের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষার্থীদের দাবি, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে।

এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশ্নফাঁসে জড়িত একটি চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতারের পর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) জানিয়েছে, তাদের তিনজনই সরকারি বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তা। তারা পরপর চারটি ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে। ডিবির প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে আরও অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেছে, চক্রটি এ পর্যন্ত প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ৬০ কোটি টাকা।

ডিবি জানায়, গ্রেফতার হওয়া সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ পরীক্ষা আয়োজনে দায়িত্বপ্রাপ্ত আহছানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজির আইসিটি বিভাগ থেকেই প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার বেলা তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত ১ হাজার ৫১১টি পদের বিপরীতে অনুষ্ঠিত এ পরীক্ষায় অংশ নেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৪২৭ জন চাকরি প্রত্যাশী। একাধিক প্রার্থীর দাবি, পরীক্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ১০০টি প্রশ্নের প্রিন্ট করা উত্তরপত্র ফেসবুকে পাওয়া গেছে। ফেসবুকে উত্তরপত্র ছড়ানোর ঘটনায় চাকরিপ্রার্থীরা প্রশ্ন তুলছেন, পরীক্ষা চারটার সময় শেষ হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ১০০টি প্রশ্নের ‘সঠিক উত্তর’ ফেসবুকে পাওয়া সম্ভব নয়। এ অবস্থায় প্রশ্নপ্রত্র ফাঁসের অভিযোগ এনে সাধারণ পরীক্ষার্থীরা এই পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন।

অর্থসূচক/মৃত্তিকা সাহা/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.