নির্মাণসামগ্রীর দাম সমন্বয়ের দাবি ঠিকাদারদের

সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের ঠিকাদাররা চলমান নির্মাণকাজে ব্যবহূত বিভিন্ন পণ্যের দাম বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের বিল নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন নির্মাণ খাতের ঠিকাদারদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রির (বিএসিআই)।

তারা বলছেন, এ সমন্বয় না হলে সরকারি প্রকল্প যেমন সময়মতো বাস্তবায়ন হবে না, তেমনি হাজার হাজার ঠিকাদার পথে বসবেন। এ জন্য তারা সরকারি ক্রয় বিধিমালা সংশোধনের প্রস্তাব করেছেন। একই সঙ্গে রেট সিডিউল হালনাগাদ করার দাবি তাদের। এ ছাড়া প্রকল্পে ব্যবহূত পানি ও বিদ্যুতের খরচ গণপূর্তের রেট সিডিউলে সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন ঠিকাদাররা।

মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাবেক সভাপতি শেখ মো. রফিকুল ইসলাম। এ সময় বর্তমান সভাপতি সফিকুল হক তালুকদারসহ সংগঠনের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সংগঠনটির সাবেক সভাপতি শেখ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, এমএস রড, স্টোন চিপস, গ্রিল, ইলেকট্রিক কেবলসহ বিভিন্ন নির্মাণ উপকরণ, শ্রম মজুরি ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে নির্ধারিত সময়ে অনেক সরকারি প্রকল্পের বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়ার প্রবণতা রোধ করার পাশাপাশি সরকারকে কিছু নীতি উদ্যোগ নিতে হবে। নতুবা ঠিকাদাররা কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন না।

রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় ৪৫ শতাংশ দাম বেড়ে বর্তমানে প্রতি টন রড ৮০ থেকে ৮২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। একইভাবে অন্যান্য নির্মাণসামগ্রীর দাম শ্রেণীভেদে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। শ্রমিক, সুপারভাইজার ও দক্ষ জনবলের মজুরি বেড়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ। পাশাপাশি জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে লিটারে ১৫ টাকা। ফলে নির্মাণসামগ্রীর পরিবহন খরচও বেড়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় চলমান অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির প্রবণতা রোধ সম্ভব না হলে প্রকল্পের সকল নির্মাণ কাজে স্থবিরতা দেখা দিবে এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন অসম্ভব হয়ে পড়বে।

তিনি আরও বলেন, সরকারি তহবিলে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়, সেখানে পণ্যমূল্য নির্ধারিত থাকে। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নকালে কোনো পণ্যের দাম বেড়ে গেলে মূল্য সমন্বয় করা হয় না। যদিও বিদেশি তহবিলের কাজে মূল্য সমন্বয় করার সুযোগ থাকে। সরকারি কাজে যে রেট সিডিউল বিবেচনা করা হচ্ছে, তা ২০১৮ সালে তৈরি করা। এরপর কয়েকবার নির্মাণ উপকরণের দাম বাড়লেও সমন্বয় করা হয়নি। চলমান নির্মাণ কাজে ঠিকাদারদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে মূল্য সমন্বয় করা দরকার।

আলোচকরা প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দাবি করেছেন, বর্তমান চলমান কাজগুলো যেহেতু ফিক্সড রেট কন্ট্রাক্ট এ সম্পাদিত হয়, তাই বিশেষ ব্যবস্থায় পিপিআর এ সন্নিবেশিত ফরমূলা অনুযায়ী প্রজ্ঞাপন জারী করে প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্ট চালু করা হউক। বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী সকল সরকারী দরপত্রের রেট শিডিউল হালনাগাদ করা হউক। প্রকল্পের কাজে ব্যবহৃত পানি ও বিদ্যুৎ সংক্রান্ত খরচ পিডব্লিউডি রেট শিডিউল এ সন্নিবেশিত করা হউক।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.