এসএমই খাতে প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার দাবি

করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে টেনে তুলতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতে যে ঋণ প্রস্তাব করা হয়েছে, সেখানে প্রয়োজনীয় নীতিমালা এবং গবেষণার ঘাটতি রয়েছে। এ কারণে এক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত ফল পাওয়া যায়নি। তাই এ বিষয়ে নতুন করে কোনো নীতি গ্রহণের আগে প্রান্তিক পর্যায়ের উদ্যোক্তাদের সমস্যা ও চ্যালেঞ্জকে বিবেচনায় নিতে হবে এবং গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাত এবং নারী উদ্যোক্তাদের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজে গবেষণা নীতির সংযোগ’ শীর্ষক কর্মশালায় এসব মতামত তুলে ধরেন আলোচকেরা। সিপিডি ও উইমেন ইকোনমিক ইমপাওয়ারমেন্ট থ্রো স্টেনদেনিং মার্কেট সিস্টেম আজ রোববার (০৭ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে যৌথভাবে এই কর্মশালার আয়োজন করে।

প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর ক্ষুদ্র ও মাঝারিদের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। এই ঋণের সুহদার নির্ধারিত হয় ৪ শতাংশ।

অনুষ্ঠানে নারী উদ্যোক্তারা প্রণোদনা ঋণ পেতে নানা হয়রানির চিত্র তুলে ধরেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম আবু ইউসুফ বলেন, নারী ও ছোট উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে এখন বৃত্তের বাইরে গিয়ে চিন্তা করতে হবে। এখন সময় হয়েছে এসএমই ব্যাংক ও নারী ব্যাংক চালুর।

এমএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক ফারজানা খান বলেন, নারী উদ্যোক্তারা চাহিদামতো ঋণ পাচ্ছে না। আমরা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৩০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে, সেখানেও নারীরা ঋণ পাচ্ছে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সায়মা হক বলেন, এসএমই খাতের জন্য যে নীতিমালা করা হয়েছে, তা অনেক ভালো। তবে এর বাস্তবায়ন আশানুরূপ না। দ্বিতীয় ধাপের ঋণ পরিশোধের শর্ত আরও শিথিল করতে হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, এই সময়ে ব্যবসায়ীদের সহায়তা দেওয়ার পরিবর্তে উল্টো কষ্ট দেওয়া হচ্ছে। তেলের দাম বাড়ায় ছোট উদ্যোক্তারা চাপে পড়বে।

সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্স বার্গ ফন লিন্ডে বলেন, নারীদের জন্য কাজে পরিবেশ অনুন্নত। আবার নারী কর্মীদের বেতন-ভাতাও কম। করোনার কারণে অনেকের আয় কমে গেছে। এজন্য নীতি সহায়তা প্রয়োজন।

কর্মশালায় সিপিডির গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম মুল প্রবন্ধে বলেন, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে টেনে তুলতে যে ঋণ দেওয়ার নীতি নেওয়া হয়েছে, তাতে গবেষণার কোনো ভূমিকা ছিল না। এ কারণে কাক্সিক্ষত ফল পাওয়া যায়নি। নতুন করে কোনো নীতি গ্রহণের আগে প্রান্তিক পর্যায়ের উদ্যোক্তাদের সমস্যা ও চ্যালেঞ্জকে বিবেচনায় নিতে হবে, এ গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তারা প্রকৃত সুবিধা পাবেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংসদ কাজী নাবিল আহমেদ। কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদ খাতুন।

অর্থসূচক/মৃত্তিকা সাহা/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.