ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে ব্যাখ্যা সজীব ওয়াজেদ জয়ের

ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা করে বাড়িয়েছে সরকার। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় দেশের বাজারেও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে দেশের বাজারেও সমন্বয় করা হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তবে সরকারের এই সিদ্ধান্তে অনেকেই সমালোচনা করছেন। আন্দোলনে নেমেছেন পরিবহনের মালিক ও শ্রমিকরা। এই অবস্থায় গুজবে কান না দিয়ে সত্য জানার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।

শনিবার রাত ৯টার পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পাতায় ‘ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি ও কিছু তথ্য, গুজব থেকে দূরে থাকুন-সত্য তথ্য জানুন’ শিরোনামের এক পোস্টে সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, ‘দেশে সম্প্রতি ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে বিভিন্ন বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু, প্রকৃতপক্ষে ২০১৩ সালে দেশে ডিজেলের মূল্য ছিল লিটারপ্রতি ৬৮ টাকা, পরবর্তীকালে ২০১৬ সালে লিটারপ্রতি তিন টাকা কমিয়ে ৬৫ টাকা করা হয়। এরপর গত সাড়ে পাঁচ বছরে দেশে ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধি হয়নি’।

‘চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। এর ফলে ডিজেলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন-বিপিসি ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন হয়’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য এবং যোগাযোগপ্রযুক্তি-বিষয়ক উপদেষ্টা।

সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘এ বছরের জুন মাসে লিটারপ্রতি দুই দশমিক ৯৭ টাকা, জুলাই মাসে তিন দশমিক ৭০ টাকা, আগস্টে এক দশমিক ৫৮ টাকা, সেপ্টেম্বরে পাঁচ দশমিক ৬২ টাকা এবং অক্টোবরে ১৩ দশমিক শূন্য এক টাকা ভর্তুকি দিতে হয়েছে। এতে গত সাড়ে পাঁচ মাসে ডিজেলের জন্য বিপিসির লোকসান হয়েছে প্রায় ১১৪৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। একই সঙ্গে ডলারের মূল্য ২০১৬ সালে ৭৯ টাকা থেকে চলতি মাসে ৮৫ দশমিক ৭৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে। ফলে ডলারে মূল্য পরিশোধে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে। ফলে ডলারে মূল্য পরিশোধে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ভারতে জ্বালানি তেলের মূল্য কমার পরও পশ্চিমবঙ্গে ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ৯০ রুপি বা ১০৪ টাকা, দিল্লিতে ৯৮ দশমিক ৪২ রুপি বা ১১৪ টাকার সমান। নেপালেও এ মূল্য ১১২ দশমিক ৩৯ নেপালি রুপি বা ৮১ টাকা। প্রতিবেশী এসব দেশের চেয়ে আমাদের মূল্য কম রয়েছে। এ কারণে আবার চোরাকারবারিরা এখান থেকে প্রতিবেশী দেশে ডিজেল পাচার করছে।’

‘সরকার ক্রমাগতভাবে জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে আসছে’ জানিয়ে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘এর ফলে এ দেশে দাম কম থাকায় (ডিজেল) বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে, যা রোধকল্পে এ মূল্যবৃদ্ধি এবং এ নিয়ে বিভ্রান্তির অবকাশ নেই।’

গত বুধবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার শুধু ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য প্রতি লিটার ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা পুনর্নির্ধারণ করেছে।’ মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তের জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিকে কারণ হিসেবে দেখানো হয়।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.