২১ দিনে প্রবাসী আয় ১২০ কোটি ডলার

চলতি মাসের প্রথম ২১ দিনে ১২০ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে মাসের শেষে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ১৭০ কোটি ডলার আসবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত বছর করোনার মধ্যেও চাঙা থাকা অর্থনীতির সবচেয়ে ভালো সূচক ছিল প্রবাসী-আয় বা রেমিট্যান্স। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে এ সূচক ধারাবাহিকভাবে কমছে।

রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ার কয়েকটি কারণ উল্লেখ করে খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছরের শুরুতে মহামারি করোনার কারণে প্রবাসীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তা থেকে তাদের জমানো টাকা দেশে পাঠিয়েছিলেন। অনেকে চাকরি হারিয়ে কিংবা ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে সব অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। তাছাড়া গত বছরের শুরুতে করোনার স্থবিরতার কারণে হুন্ডি প্রবণতা কমে যায়। ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় দেশে পাঠানোর প্রবণতা বেড়ে যায়। এসব কারণে মহামারির মধ্যেও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ে।

এখন সারাবিশ্বেই করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। অনেক দেশে ভ্রমণ-যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্য সচল হয়েছে। ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে অর্থের চাহিদা বেড়ে গেছে। এ কারণে বৈধ চ্যানেলে প্রবাসী আয় কমছে। এছাড়া অনেকে দেশে এসে আটকা পড়েছেন। আবার অনেক প্রবাসী নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে গিয়ে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দিয়েছেন। এসব কারণে রেমিট্যান্স নেতিবাচক ধারায় রয়েছে। তবে নতুন করে শ্রম রফতানি শুরু হওয়ায় শিগগিরই আবার প্রবাসী আয় ইতিবাচক হবে বলে প্রত্যাশা করছেন ব্যাংকাররা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে কমছে রেমিট্যান্স। সেপ্টেম্বর মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবাসী আয় কমেছে ১৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী আয় এসেছে ১৭২ কোটি ৬২ লাখ ডলার। আর ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আয় এসেছিল ২১৫ কোটি ১০ লাখ ডলার। আর গত আগস্ট মাসে প্রবাসীরা ১৮১ কোটি ডলারের আয় পাঠান দেশে, যা আর গত বছরের আগস্টের ১৯৬ কোটি ডলার থেকে ৮ শতাংশ কম। এছাড়া জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে প্রবাসী আয় কমেছে প্রায় সোয়া ৩ শতাংশ। জুলাইয়ে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ১৮৭ কোটি ডলার।

জানা গেছে, বর্তমানে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এলে অতিরিক্ত ২ শতাংশ প্রণোদনা দেয় সরকার। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে প্রায় দুই হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২ লাখ কোটি টাকার সমান। এ আয় ২০১৯-২০ অর্থবছরের এক হাজার ৮০৩ কোটি ডলারের চেয়ে ৩৬ শতাংশ বেশি।

অর্থসূচক/মৃত্তিকা সাহা/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.