ওমানে ঘূর্ণিঝড়ে ৩ বাংলাদেশি নিহত

ওমানে ঘূর্ণিঝড় শাহিনের আঘাতে একই গ্রামের পরস্পর আত্মীয় লক্ষ্মীপুরের তিনজন প্রবাসী নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার (৬ অক্টোবর) তাদের মৃতদেহ শনাক্ত করে ওমান পুলিশ।

নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার পাবর্তীনগর ইউনিয়নের আব্দুল করিম চেরাঙ্গ বাড়ির মৃত নুরুল আমিনের ছেলে শামছুল ইসলাম (৫৫), চাঁন কাজী বাড়ির শুক্কুর উল্লাহর ছেলে জিল্লাল হোসেন (৪৫) ও মিঝি বাড়ির আব্দুস শহিদের ছেলে আমজাদ হোসেন হৃদয় (২৮)। শামছুল ইসলাম ও আমজাদ হোসেন হ্নদয় মামা-ভাগিনা। জিল্লাল হোসেন ও শামছুল ইসলাম চাচাতো ভাই।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নিহতরা ওমানের সাহামে উম্মে ওয়াদি লেবান পারপার নামক স্থানে খেজুর বাগানের কাজ করতেন। ঘূর্ণিঝড় শুরু হলে তাদেরকে বাতাস ও পানির স্রোত ভাসিয়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়ভাবে খোঁজাখুঁজির পর তাদের ক্ষত-বিক্ষত লাশের সন্ধান মেলে।

নিহত আমজাদ হোসেন হ্নদয়ের বাবা আবদুস সহিদ জানান, তার ছেলে ওমানের সাহামে উম্মে ওয়াদি লেবান পারপার নামক স্থানে খেজুর বাগানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো। তার নিকটাত্মীয় অপর ২ জনও একই এলাকায় কাজ করতো। রোববার ঝড়ের পরে থেকে তারা নিখোঁজ ছিল। ঝড়ে আসা পানি নেমে যাওয়ার পর মঙ্গলবার সকালে শামছুল ইসলাম এবং জিল্লাল হোসেনের লাশ সনাক্ত করে প্রবাসীরা পুলিশকে জানায়।

অন্যদিকে গতকাল বুধবার তার ছেলে আমজাদ হোসেন হ্নদয়ের লাশ পাওয়া যায়। মৃত শামছুল ইসলাম গত ত্রিশ বছর ওমান প্রবাসী ছিলেন। তার তিন মেয়ে, এক ছেলে, স্ত্রী রয়েছে। মৃত জিল্লাল হোসেন গত ১৫ বছর ওমানে রয়েছেন। তার ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছে। অন্যদিকে মৃত আমজাদ হোসেন হৃদয় তিন বোন, এক ভাই ও বাবা মা রয়েছে। মৃত ব্যক্তিরা ছিলেন পরিবারে অর্থ উপার্জনের একমাত্র ভরসা। এদের মৃত্যুর খবরে পুরো এলাকাতে শোকে ছায়া নেমে এসেছে।

পার্বতীনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন আহমেদ ভূইঁয়া তার ইউনিয়নের এ তিন প্রবাসী নিহত হওয়ার ঘটনা নিশ্চিত করে জানান, লাশ বাংলাদেশে আনার জন্য চেষ্টা চলছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামুনুর রশিদ বলেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মৃতদের দেশে আনার ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়াও তাদের পরিবারের জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থা করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত রোববার ওমানে ঘূর্ণিঝড় শাহিনের কারণে ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে তীব্র বৃষ্টিপাতে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়। বাতাসের গতিবেগ ছিলো ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার। ওই সময় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রায় দশ মিটার উঁচু ঢেউ তৈরি হয়

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.