ক্রোয়েশিয়ায় টিভি রফতানি করছে ওয়ালটন

এবার ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত ওয়ালটন ব্র্যান্ডের টেলিভিশন রফতানি হচ্ছে ইউরোপের দেশ ক্রোয়েশিয়া। এ উপলক্ষ্যে ক্রোয়েশিয়ার খ্যাতনামা ইলেকট্রনিক্স পণ্য বিপণনকারী কোম্পানি ‘স্মার্টফোন আই ট্যাবলেট সার্ভিস ডিওও’ সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি করেছে বাংলাদেশি সুপারব্র্যান্ড ও ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন।

সম্প্রতি (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ওয়ালটন করপোরেট অফিসে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আয়োজিত এক প্রোগ্রামে স্মার্টফোন আই এবং ওয়ালটনের মধ্য ওই ব্যবসায়িক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওয়ালটনের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিটের প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিম এবং স্মার্টফোন আই কোম্পানির চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) মারিও ক্রালজ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ব্যবাসয়িক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

ক্রোয়েশিয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ওয়ালটন আইবিইউ শাখার ভাইস-প্রেসিডেন্ট আমিনুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এস এম জাহিদ হাসান, ওয়ালটন টিভির চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিও) প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন, আইবিইউ শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট তাওসীফ আল মাহমুদ, অপারেটিভ ডিরেক্টর রেজাউল ইসলাম, ক্রোয়েশিয়া থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন স্মার্টফোন আই’র প্রোডাক্ট ম্যানেজার ম্যারিন মালটারিক।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ওয়ালটনের টেলিভিশনের বড় রফতানি বাজার এখন ইউরোপ। উন্নত বিশ্বের এই বাজারে ওয়ালটন টিভি রফতানির পরিমাণ ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি। ইতোমধ্যে ইউরোপের ১২টি দেশে টিভি রফতানি বাজার সম্প্রসারণ করেছে ওয়ালটন। ওই দেশগুলোতে ওইএম (ওরিজিনাল ইক্যুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার) পদ্ধতির পাশাপাশি ওয়ালটন ব্র্যান্ড নামে টিভি রফতানি হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ওয়ালটন টিভির ব্র্যান্ড বিজনেস সম্প্রসারণ করা হলো ইউরোপের দেশ ক্রোয়েশিয়ায়। দেশটিতে ওয়ালটন টিভি রফতানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ওয়ালটনের এই অগ্রযাত্রায় ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে যোগ দিয়েছেন ‘স্মার্টফোন আই ট্যাবলেট সার্ভিস ডিওও’।

ক্রোয়েশিয়ায় ওয়ালটন আইবিইউ শাখার ভাইস-প্রেসিডেন্ট আমিনুল ইসলাম বলেন, ভৌগোলিকভাবে ক্রোয়েশিয়া ওয়ালটনের জন্য ব্যাপক সম্ভাবনাময় বাজার। সেখানে বার্ষিক ২২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বাজার রয়েছে। যা ২০২৫ সালে ২৯২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছাবে। ব্যাপক সম্ভাবনাময় এই বাজারে ওয়ালটনের পরিবেশক হিসেবে কাজ করবে স্মার্টফোন আই কোম্পানির আওতাধীন ‘নোয়া’ ব্র্যান্ড। ইউরোপের প্রতিযোগিতামূলক বাজারটিতে ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবসা পরিচালনার করে আসছেন তারা। টিভি এবং মোবাইল সেগমেন্টে ক্রোয়েশিয়ায় ৩৩ শতাংশ মার্কেট শেয়ার এখন স্মার্টফোন আই কোম্পানির। এখন থেকে তারা ক্রোয়েশিয়ায় ওয়ালটন ব্র্যান্ডের টিভি, রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার, ওয়াশিং মেশিন, মোবাইল ফোন ও মাইক্রোওয়েভ ওভেনসহ বিভিন্ন পণ্য বাজারজাত করবে।

এডওয়ার্ড কিম বলেন, বলকান পেনিনসুলার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত হওয়ায় ক্রোয়েশিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ বাজারে পরিণত হয়েছে। বসনিয়া, হার্জেগোভিনা, মন্টেনিগ্রো, মেসিডোনিয়া ও আলবেনিয়াসহ ইউরোপের বহু দেশে সরব উপস্থিতি রয়েছে স্মার্টফোন আই কোম্পানিটির। তাই ক্রোয়াশিয়াসহ মধ্য-ইউরোপ ও অড্র্রিয়াটিক সি অঞ্চলের দেশগুলোতে ওয়ালটনের রফতানি বাজার সম্প্রসারণের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ক্রোয়েশিয়াসহ ইউরোপের এই অঞ্চলে ইলেকট্রনিক্স মার্কেটে নেতৃত্ব দেবে ওয়ালটন।

মারিও ক্রালজ বলেন, ইউরোপ সবসময়ই প্রতিযোগিতামূলক বাজার। এখানে সবসময়ই চ্যালেঞ্জ থাকে। আমাদের কোম্পানি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ক্রোয়েশিয়ায় ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। টিভি এবং মোবাইল সেগমেন্টে ক্রোয়েশিয়ায় ৩৩ শতাংশ মার্কেট শেয়ার স্মার্টফোন আই কোম্পানির। বাজার সম্প্রসারণে কাজ করছি আমরা। বাংলাদেশের ওয়ালটন টিভির পিকচার ও গুণগত মান খুব উন্নত। তারা পণ্য তৈরি করছে ইউরোপীয় স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করে। ওয়ালটন টিভির উন্নতমান ও আমাদের দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চেষ্টা করবো। আশা করছি প্রতিযোগিতামূলক ও উন্নত বাজরগুলোতে আমরা আশানুরূপ ফল লাভ করতে পারবো।

মোস্তফা নাহিদ হোসেন বলেন, ইউরোপে বাজার সম্প্রসারণে ওয়ালটনের পক্ষ থেকে এই কোম্পানিকে সব ধরণের সহযোগিতা প্রদান করা হবে। বর্তমানে বাংলাদেশের টেলিভিশন বাজারের সিংহভাগ মার্কেট শেয়ার এখন ওয়ালটনের। আমাদের টার্গেট এখন ইউরোপে ওয়ালটন টিভির মার্কেট শেয়ার বাড়ানো।

দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের অনেক দেশে শতাধিক বিজনেস পার্টনারের মাধ্যমে নিজস্ব কারখানায় তৈরি টিভি রফতানি করছে ওয়ালটন। এরই মধ্যে বিশ্ববাজারে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে ওয়ালটন ব্র্যান্ড টিভি। এ বছর ইউরোপের বাজারে একদিনেই ২.৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের টিভি রফতানির আদেশ পায় ওয়ালটন। এই অর্জন আমাদের দেশের রফতানি খাতে এক বিশাল মাইলফলক।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.