হিংসা দিয়ে কোন সমস্যার সমাধান হয়নি: আইনমন্ত্রী

হিংসা দিয়ে পৃথিবীতে কখনোই কোন সমস্যার সমাধান হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।

তিনি বলেন, তাই সংঘাত মুক্ত সমাজ, সংঘাত মুক্ত পৃথিবী, যুদ্ধ মুক্ত বিশ্ব গঠনে মহাত্মা গান্ধীর দর্শন মানুষকে বহুলভাবে অনুপ্রাণিত করে। স্বাভাবিক অস্ত্রের বিপরীতে অহিংস অস্ত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মনে রাখতে হবে অহিংসা সৃষ্টি করে, ধ্বংস করে না।

আজ শনিবার (০২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর গান্ধী আশ্রমে মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতি জাদুঘর উদ্বোধনের পর এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আনিসুল হক বলেন, ১৯৪৬ সালে মহাত্মা গান্ধী নোয়াখালীর সুধামপুর গ্রামে পৌঁছার পর গান্ধীজি ঘোষণা দিয়েছিলেন আমি সর্ব অর্থে বাঙালি হয়ে গেছি আজ। তার এ কথাটা দাঙ্গা পিড়িত মানুষের মন জিতে নিয়েছিল। গান্ধীর সম্পর্কে অবাধ শ্রদ্ধা আজো দেখা যায় এ অঙ্গনে। আসলে এর পিছনে ছিল সাহস। বাঙালি না হয়েও গান্ধীজি যা দেখাতে পেরেছিলেন। এমন সাহসের অনেক নজির আজও অজানা রয়ে গেছে বাংলার ইতিহাসে।

মন্ত্রী বলেন, সে সময় মুসলিম লীগ নেতারা পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালাতে থাকেন যেন মহাত্মা গান্ধীকে নোয়াখালী থেকে বিতাড়িত করা যায়। মুসলিম লীগ সমর্থিত পত্রিকাগুলো তাকে বিচ্ছিন্নভাবে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে ব্যঙ্গ সহকারে খবর পরিবেশন করা হত। মুসলিম লীগের এসব কুপ্রচারণায় গান্ধীজি মোটেও বিচলিত হননি। হিংসা থেকে দূরে রাখাই ছিল মহাত্মা গান্ধীর অন্যতম মূলমন্ত্র।

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, আজ সারা বিশ্বে সম্প্রদায়-সম্প্রদায়, জাতিতে-জাতিতে যে বিদ্বেষ, হিংসা ছড়িয়ে পড়েছে তা থেকে মানবজাতীকে রক্ষা করতে মহাত্মা গান্ধীর অহিংস বাণী প্রেরণা যোগায়। হিংসা দিয়ে পৃথিবীতে কখনোই কোন সমস্যার সমাধান হয়নি। তাই সংঘাত মুক্ত সমাজ, সংঘাত মুক্ত পৃথিবী, যুদ্ধ মুক্ত বিশ্ব গঠনে মহাত্মা গান্ধীর দর্শন মানুষকে বহুলভাবে অনুপ্রাণিত করে। স্বাভাবিক অস্ত্রের বিপরীতে অহিংস অস্ত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মনে রাখতে হবে অহিংসা সৃষ্টি করে, ধ্বংস করে না।

স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে বর্তমান সরকার অহিংস নীতি অনুযায়ী কাজ করছে উল্লেখ করে আনিসুল হক বলেন, জাতির পিতা যে স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করতে চেয়েছেন সেখানে অহিংস নীতি ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন অসাম্প্রদায়িক ও অহিংস নীতির মানুষ। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই অহিংস নীতিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন।

আলোচনা সভায় গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের সভাপতি বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন, ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সংসদ সদস্য অরোমা দত্ত, জাতিসংঘের অন্তবর্তীকালীন প্রতিনিধি তৌমু পউতি আইনেন প্রমুখ।

এর আগে, বিকেলে মহাত্মা গান্ধীর ১৫২তম জন্মবার্ষিকী, আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবস ও নবরুপায়িত গান্ধী মেমোরিয়াল মিউজিয়ামের উদ্বোধন করা হয়। নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের ক্যাম্পাসে ফিতা কেটে মিউজিয়ামের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। পরে মহাত্মা গান্ধীর প্রতিকৃতিতে অতিথিরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং শান্তি বইতে স্বাক্ষর করেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.