দেশে এসএমই খাত অদক্ষ জনবলের উপর নির্ভরশীল: বিএসইসি কমিশনার

দেশে এসএমই খাতে প্রায় এক লাখ প্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই মুনাফা অর্জন করে। কিন্তু তাদের আর্থিক হিসাব সঠিকভাবে হয় না। একই সঙ্গে তারা অদক্ষ জনবলের ওপর নির্ভরশীল। যে কারণে এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনেক ব্যয় হয়। তাই ডিএসই ও এসএমই ফাউন্ডেশনকে সেসব প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করার জন্য আহ্বান করেছেন শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. মিজানুর রহমান।

বৃহস্পতিবার ডিএসইর এসএমই প্লাটফর্মে লেনদেনের উদ্বোধনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ডিএসইর চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান। আর বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএসইর পরিচালক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূইয়া। অনুষ্ঠানের মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএসইর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা সাইফুর রহমান মজুমদার।

মিজানুর রহমান বলেন, এসএমই কোম্পানিগুলোকে অর্থ সংস্থানের জন্য ঋণ নিতে হয়। তবে পুঁজিবাজারে এসএমই প্লাটফর্মের যাত্রার মাধ্যমে ওইসব কোম্পানিগুলো স্টক এবং ডেবট সিকিউরিটিজ ইস্যুর সুযোগ পেল। একইসঙ্গে সুশাসন ও স্বচ্ছতায় নিশ্চিতের দায়বদ্ধতার মধ্যে চলে আসতে হবে।

বিএসইসি কমিশনার বলেন, বিএসইসি পুঁজিবাজারের কোম্পানিগুলোতে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন পরিপালনে জোরদার করে। যাতে করে উদ্যোক্তাদেরকে দক্ষ ব্যবস্থাপনা নিয়োগ এবং আন্তর্জাতিক হিসাব মান অনুযায়ি আর্থিক হিসাব তৈরী ও উপস্থাপন করতে হয়। যা কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদে ব্যবসা উন্নয়নে সহযোগিতা করে।

বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকে রক্ষা ডিএসইর প্রধান কাজ উল্লেখ করে বিএসইসির এই কমিশনার বলেন, এসএমই কোম্পানিগুলোর তথ্য সঠিকসময়ে প্রকাশের জন্য ডিএসইর ম্যানেজমেন্টকে অনলাইন ড্যাশবোর্ড প্রস্তুতের জন্য আহ্বান করছি। যাতে করে কোম্পানিগুলো তাদের আর্থিক হিসাবসহ অন্যান্য বিষয়গুলো দ্রুত প্রকাশ করতে পারে।

অনুষ্ঠানে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূইয়া বলেন, ডিএসইর এসএমই প্লাটফর্মটি পূর্ণাঙ্গ রূপ পাওয়ার মধ্য দিয়ে নতুন উচ্চতায় যাবে দেশের পুঁজিবাজার। এজন্য আরজেএসসিতে যে প্রায় ১ লাখ এসএমই রেজিস্ট্রি কোম্পানি আছে, সেসব কোম্পানি ডিএসইর এসএমই বোর্ডে আসতে পারে।

অনুষ্ঠানে এসএমইতে লেনদেন শুরু হওয়া ৬ কোম্পানির মধ্যে ৩ কোম্পানির প্রতিনিধি সংক্ষিপ্ত বক্তৃত্বা রাখেন।

এরমধ্যে মাস্টার ফিড অ্যাগ্রোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কবির আহমেদ বলেন, তাদের কোম্পানি মানসম্পন্ন পণ্য তৈরী করে যাচ্ছে। এমনকি করোনা মহামারির মধ্যেও দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে কাজ করে গেছে। তারা বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ রিটার্ন দিতে চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন।

অরিজা অ্যাগ্রোর পরিচালক এম আজহার রহমানও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেবেন বলে জানান। একইসঙ্গে ওরিজা অ্যাগ্রোতে বিনিয়োগ করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ দেন।

উল্লেখ্য, ছয়টি কোম্পানি নিয়ে ডিএসই’র এসএমই প্লাটফর্ম চালু হলো। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দুটি নতুন আর বাকি চারটি ওভার দ্যা কাউন্টার বা ওটিসি থেকে ফেরত। নতুন কোম্পানি দুটি হলো- মাস্টার ফিড লিমিটেড ও অরিজা এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।

ওটিসি থেকে ফেরত চারটি কোম্পানি হলো- অ্যাপেক্স ওয়েভিং অ্যান্ড ফিনিসিং মিলস, ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েস, হিমাদ্রি লিমিটেড ও বেঙ্গল বিস্কুট লিমিটেড।

তথ্য মতে, মাস্টার ফিড এগ্রোটেকের লেনদেন শুরু হয়েছে ১২টাকায়, অরিজা এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের লেনদেন শুরু হয়েছে ১২টাকায়, ওটিসি ফেরত অ্যাপেক্স ওয়েভিং অ্যান্ড ফিনিসিং মিলসের লেনদেন শুরু হয়েছে ১৪.৪০ টাকায়, ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েসের লেনদেন শুরু হয়েছে ১৯.৯০টাকায় ও বেঙ্গল বিস্কুটের লেনদেন শুরু হয়েছে ২১৩.৩০ টাকায়। তবে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত হিমাদ্রির কোনো লেনদেন হয়নি। কোম্পানিটির এডজাস্টমেন্ট ওপেনিং প্রাইজ দেওয়া রয়েছে ৮ টাকা।

অর্থসূচক/এমআর/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.