ইকুয়েডরের কারাগারে সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ১১৬

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরের কারাগারে ভয়াবহ সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১৬ জনে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দেশটির প্রেসিডেন্ট গুইলারমো লাসসো এই তথ্য জানান।

আজ বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও বৃটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, সংঘর্ষে সবমিলিয়ে নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৬ জনে। এদের মধ্যে পাঁচজন ছুরিকাঘাতে এবং অন্যরা গুলিতে মারা গেছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকেই।

দেশটির ইতিহাসে কারাগারে এমন সংঘর্ষের ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। কারাগারের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে সেখানে পুলিশের ৪০০ সদস্য যোগ দেন। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বন্দিরা গ্রেনেড ছুড়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমান্ডার ফুসতো বুনানো।

ইকুয়েডরের প্রিজন সার্ভিস ডিপার্টমেন্টের পরিচালক বলিভার গার্জন বলেন, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর আবারও সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও গ্রেনেড ছোড়ার ঘটনা ঘটে। আমরা ভেতরে প্রবেশ করেছি।

রয়টার্স জানিয়েছে, ইকুয়েডরের গুয়াইয়াস প্রদেশের গুয়াইয়াকুইল শহরের পেনিটেনসিয়ারিয়া দেল লিটোরাল কারাগারে এই সহিংস দাঙ্গার ঘটনা ঘটে। কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সেখানে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর ভেতরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে দেখা গেছে।

মঙ্গলবার রাতে হওয়া ওই সংঘর্ষের পর বুধবার তাৎক্ষণিকভাবে ২২ জন নিহতের কথা জানানো হলেও সময় পার হওয়ার সাথে সাথে নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এটি নিয়ে চলতি বছর দেশটির কারাগারে তৃতীয়বারের মতো প্রাণঘাতী দাঙ্গার ঘটনা ঘটল। সর্বশেষ এই সংঘর্ষে ১১৬ জন নিহতের পাশাপাশি আরও ৮০ জন বন্দি আহত হয়েছেন।

বুধবার ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট গুইলারমো লাসসো সাংবাদিকদের বলেন, এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ক্ষমতা নিয়ে দ্বন্দের কারণে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো কারাগারগুলোকে কার্যত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করেছে। মহান সৃষ্টিকর্তা ইকুয়েডরের ভালো করুন যেন আমরা প্রাণহানির সংখ্যা এড়াতে পারি। এটিই আমার প্রার্থনা।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, কারাগারের জানালা থেকে গুলি ও বিস্ফোরক ছুড়ছেন কয়েদিরা। গুয়াইয়াকুইলের প্রধান পুলিশ কর্মকর্তা ফাউস্তো বুয়োনানো এএফপিকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের সংঘাতে অ্যাসল্ট রাইফেল, পিস্তল, গ্রেনেড ও ধারাল অস্ত্র ব্যবহার করতে দেখা গেছে।

দেশটির কারাগারে প্রতিদ্বন্দ্বি গ্রুপের কয়েদিদের মধ্যে প্রায়ই এমন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব কয়েদিদের সঙ্গে মেক্সিকোর বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ী গ্যাংয়ের যোগাযোগ রয়েছে। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে একটি কারাগারে সংঘর্ষে ৭৯ জন বন্দি নিহত হন।

গুয়ায়েকুইল ইকুয়েডরের প্রধান বন্দর নগর। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক চোরাচালানের ক্ষেত্রে এই বন্দরটি একটি বড় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.