ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

রাজধানীর চানখারপুল থেকে গামছায় ঝোলানো অবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে মাসুদ আল মাহাদী অপু নামে সাবেক ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করে চকবাজার থানা পুলিশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন অপু। তার হল ছিল মাস্টার দা সূর্যসেন। পড়াশোনা শেষ করেন ২০১৭ সালে।

অনার্স ও মাস্টার্সে ভালো রেজাল্ট করা অপু কিছুদিন সাংবাদিকতাও করেন। চাকরি ছেড়ে গত দুই বছর ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বিসিএসের। ৪১তম বিসিএস প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হয়ে লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

তার গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি। দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি বড়।

অপুর রুমমেট জহিরুর ইসলাম বলেন, ‘আমরা এক রুমে তিনজন থাকি। আমি এবং অন্যজন দারাজে কাজ করি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও সকাল ৯টায় বাসা থেকে বের হয়ে যাই। ১০টার সময় অপর জনও বাসা থেকে বের হয়ে যান।

‘আমি যখন বাসা থেকে বের হই তখনও অপু ঘুমাচ্ছিল। দুপুর অফিস শেষে বাসায় আসার পর দেখি দরজা বন্ধ। অনেকবার ফোন দিয়েছি। ফোন রিসিভ হয় না। দরজার উপরে একটি ছোট জানালা আছে, সেটি দিয়ে দেখি গামাছায় ঝোলানো। এরপর ৯৯৯ নাইনে ফোন দেই। আশেপাশের লোকজনকে ডেকে দরজা ভাঙি।’

দুপুর ১২টায় অপুর বন্ধু সাইদ পাশের রুম থেকে তার রুমে যান। তখনই তার সঙ্গে শেষ কথা হয় অপুর।

সাইদ বলেন, ‘আজ দুপুর ১২টায় আমি স্কচটেপ আনতে অপুর রুমে যাই। তখন দরজা খোলা ছিল। দেখি ও শুয়ে শুয়ে মোবাইল টিপছে। তাকে বললাম এতক্ষণ শুয়ে আছিস কেন। সে বলল, কাল রাতে ভালো ঘুম হয়নি। এরপর আমি তার রুম থেকে স্কচটেপ এনে আমার রুমে এসে কাজ শেষ করে আবার তার রুমে গিয়ে দিয়ে আসি। এরপর আমি আমার রুমে চলে আসি।’

সাইদ আরও বলেন, ‘আমি চলে আসার পর দুপুর ২টার দিকে তার রুমমেট জহিরুল আমাকে বলে, সাইদ ভাই এদিকে আসেন তো। কী যেন হয়েছে। আমি এসে দেখি দরজা বন্ধ। উপরের জানালার দিকে তাকিয়ে দেখি ফ্যানের সঙ্গে গামছা বাঁধানো। এরপর আমরা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যায় কী করব ভেবে। পরে একজন ৯৯৯ নাইনে ফোন দেয়। আর আমরা সিদ্ধান্ত নেয় ভিডিও করে দরজাটা ভাঙি। এরপর এই অবস্থা।’

অপর এক বন্ধু জানান, মঙ্গলবার বিসিআইসিতে মৌখিক পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল অপুর। এজন্য রোববার রাতেও ভাইভার কাগজপত্র প্রস্তুত করছিলেন তিনি।

লালবাগ থানার ডিসি জসীম উদ্দীন মোল্লা বলেন, ‘আমরা সবার সঙ্গে কথা বলেছি। তার রুমমেটরা বলছেন এটি আত্মহত্যা। তবে এখন লাশের সুরতহাল করা হচ্ছে। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে পরিষ্কার হবে সে কীভাবে মারা গেছে। এরপর পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.