ইভ্যালিকে দেউলিয়া ঘোষণা করতে চেয়েছিলেন রাসেল: র‌্যাব

বিপুল সংখ্যক গ্রাহক তৈরি করে একটি ব্র্যান্ডভ্যালু তৈরির পরিকল্পনা ছিল ইভ্যালির সিইও রাসেলের। ব্র্যান্ডভ্যালুকে কাজে লাগিয়ে কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কাছে দায়সহ বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন তিনি।

এছাড়া তিনবছর পূর্ণ হলে পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা নেন রাসেল। এরপর দায় মেটাতে ব্যর্থ হলে প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া ঘোষণার পরিকল্পনাও ছিল তার।

আজ শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে র‌্যাব সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

র‌্যাব জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল জানান, গত ফেব্রুয়ারিতেও এই দেনার পরিমাণ ছিল ৪০৩ কোটি টাকা। গ্রাহকের এই টাকা কীভাবে ফেরত দেওয়া হবে-র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। সর্বশেষ দায় মেটাতে ব্যর্থ হলে ইভ্যালিকে দেউলিয়া ঘোষণার পরিকল্পনাও ছিল রাসেলের।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন বলেন, ইভ্যালিতে রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের বিনিয়োগ ছিল খুবই কম। তাদের ব্যবসায়িক কৌশল ছিল নতুন গ্রাহকের ওপর দায় চাপিয়ে দিয়ে পুরোনো গ্রাহক ও সরবরাহকারীদের দেনা আংশিক পরিশোধ করা। তারা ‘দায় ট্রান্সফারের’ মাধ্যমে ব্যবসা করছিলেন। রাসেল জেনেশুনেই এই নেতিবাচক কৌশল গ্রহণ করেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে চালু হওয়া ইভ্যালি এখনও কোনো লাভ করতে পারেনি। অথচ তার অফিস পরিচালনা ও স্টাফদের বেতন বাবদ ব্যয় ছিল প্রায় ৫ কোটি টাকা। যার পুরোটাই গ্রাহকের কষ্টার্জিত বিনিয়োগের অর্থে।

গ্রাহকদের দায় মেটাতে বিভিন্ন অজুহাতে সময় বাড়ানোর আবেদন রাসেলের একটি কৌশল বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন খন্দকার আল মঈন। তিনি জানান, দায় মেটাতে ব্যর্থ হলে সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে ইভ্যালির সিইও দেউলিয়া ঘোষণার পরিকল্পনা করেছিলেন।

প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাসেল ও তার স্ত্রী চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের র‌্যাব সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়।

এর আগে গত বুধবার দিবাগত রাতে রাসেল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে মামলা করেন আরিফ বাকের নামের এক গ্রাহক। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, ইভ্যালি ডটকমের চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে পণ্য কিনতে ওই প্রতিষ্ঠানকে ৩ লাখ ১০ হাজার ৫৯৭ টাকা দেন। ৭ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে পণ্য দেওয়ার কথা থাকলেও তা না দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ওই অর্থ আত্মসাৎ করেন প্রতিষ্ঠানের দুই কর্ণধার।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.