নতুন জোট নিয়ে ফ্রান্সের ক্ষোভ, বাইডেনকে ট্রাম্পের সঙ্গে তুলনা

ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদারে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে নতুন জোট গড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) তিন দেশের সরকারপ্রধান যৌথভাবে এ জোটের ঘোষণা দেন।

চুক্তি অনুসারে, অস্ট্রেলিয়াকে নিউক্লিয়ার সাবমেরিন তৈরিতে সাহায্য করবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। বিশ্লেষকদের মতে, এই জোট গঠন হয়েছে মূলত চীনা প্রভাব ঠেকাতে। তবে এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফ্রান্সও। স্বার্থে আঘাত লাগায় সরাসরি বাইডেনের সমালোচনা করতেও ছাড়েনি তারা। এটিকে ‘পেছন থেকে আঘাত হিসেবে’ দেখছে ফ্রান্স।

কারণ এ চুক্তির কারণে অস্ট্রেলিয়া ১২টি সাবমেরিন নির্মাণের জন্য যে ৪০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছিল, তা বাতিল হয়ে গেছে। ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি সত্যিকার অর্থেই পেছন থেকে আঘাত।

তিনি বলেন, আমরা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে একটি আস্থার সম্পর্ক তৈরি করেছিলাম, কিন্তু সেই আস্থার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে।

তবে ফ্রান্সের ক্ষোভ কমাতে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ফ্রান্স অনেক বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার’ হিসেবে রয়েছে। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন এ কথা বলেন।

ফ্রান্সের মূল ক্ষোভটা গিয়ে পড়েছে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। এভাবে ‘একতরফা’ চুক্তি করায় বাইডেনের সঙ্গে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মিল খুঁজে পেয়েছেন ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি ফ্রান্সইনফো রেডিওকে বলেন, (বাইডেনের) এই নৃশংস, একতরফা ও অনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত অনেকটা ট্রাম্প যা করতেন, আমাকে সেটিই মনে করিয়ে দিচ্ছে। মিত্রদের সঙ্গে এমনটি করতে হয় না।

এছাড়া ফরাসি প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে এক যৌথ বিবৃতিতে লে দ্রিয়াঁ বলেছেন, আমরা যখন ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, তখন মার্কিন সিদ্ধান্তে ইউরোপীয় মিত্র ও ফ্রান্সের মতো অংশীদারকে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারিত্ব থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে ফ্রান্স শুধু অনুশোচনাই করতে পারে।

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে কেন্দ্র করে এইউকেইউস নামে সম্প্রতি যে জোট গঠিত হয় সেখানে কোনো ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

অস্ট্রেলিয়ার কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেন বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোকে আহ্বান জানাই।

তিনি আরও বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলসহ ফ্রান্সের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে যুক্তরাষ্ট্র ‘সম্ভাব্য সব সুযোগ’ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।

নতুন জোট গঠনের ঘোষণার একদিন পর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য এল।

সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.