উৎপাদন খরচ অনেক, বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হোন: প্রধানমন্ত্রী

ভর্তুকি দিয়ে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ অনেক বেশি। সবাইকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে।

তিনি বলেন, বিল দেন বলে অপ্রয়োজনে বাতি জ্বালিয়ে রাখবেন না। উৎপাদন খরচের তুলনায় বিল কম নিই। অনেক ভর্তুকি দিতে হয়। আপনার সাশ্রয়ে আরেকজন গরিব মানুষ খুবই প্রয়োজনীয় আলো পাবে, এটা মনে রাখতে হবে।

আজ রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) নির্মাণ শেষ হওয়া পাঁচটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বিদ্যুৎভবনে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বিদ্যুৎ যারা ব্যবহার করেন, তাদেরকে সাশ্রয়ী হতে হবে। দেশে এখন অনেকে অর্থশালী, সম্পদশালী হয়ে গেছেন। কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে, আমরা যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছি, তাতে খরচ অনেক বেশি।

তিনি বলেন, গ্রাহকদের সেবা দেওয়ার জন্য সেখানে কিন্তু ব্যাপকহারে ভর্তুকি দিচ্ছি। উৎপাদনের যে খরচ, সেই খরচটা কিন্তু আপনাকে বিল হিসেবে দিতে হচ্ছে না এবং অনেক কম টাকা বিল দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাইকে অনুরোধ করবো বিদ্যুৎ ব্যবহারে আপনারা একটু সচেতন হবেন। হাতে যখন কাজ থাকবে না, আপনি নিজে বিদ্যুতের সুইচগুলো বন্ধ করে রাখুন। এতে বিলটাও কম আসবে, আপনাকেও টাকা কম দিতে হবে। আর আমাদের বিদ্যুৎটাও সাশ্রয় হবে। সেই বিষয়টা সবাইকে আমরা একটু অনুরোধ করবো।

সরকারপ্রধান বলেন, বিদ্যুৎ ব্যবহারের সময় যদি আপনারা সাশ্রয়ী না হন, তাহলে আমরা আর কত ভর্তুকি দিতে পারবো? সেটা দেখতে হবে। সেজন্যই সবাইকে আমরা অনুরোধ করবো যে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে মিতব্যয়ী হতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও প্রয়োজন ছাড়া বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন না জানিয়ে বলেন, যখন বের হই তখন আমি নিজের হাতেই সুইচগুলো অফ করি, যেখানে যেখানে আমার মনে হয় যে এখানে বিদ্যুৎটা অপ্রয়োজনীয়।

তিনি আরও বলেন, আমি জানি গণভবন সরকারি। এখানে যারা কাজ করেন, তাদের নিয়ম হচ্ছে সব জ্বালিয়ে রাখা। কিন্তু আমি যতটুকু জায়গায় বসবাস করি, সেটুকুতে আমি সাশ্রয়টা সঠিকভাবে করে রাখি, অভ্যাসটা ঠিক রাখি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিরদিন তো কেউ আর প্রাইম মিনিস্টার থাকে না। এটা হয়তো পাঁচ বছরের জন্য আসে। এরপরে তো আর থাকবো না। তখন তো আবার নিজের মতই চলতে হবে। অভ্যাসটা (বিদ্যুৎ সাশ্রয়) নষ্ট করে তো লাভ নেই।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, আপনারাও যারা বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন, এটা মনে রাখবেন এক এক ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে অনেক বেশি খরচ পড়ে, যা আমরা আপনাদেরকে সবাইকে খুব অল্প খরচে দিয়ে থাকি। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সবাইকে বলবো মিতব্যয়ী হোন। যেটা হয়তো আরেকজন গরিব মানুষকে আমরা সহায়তা দিতে পারবো এবং দেশ এগিয়ে যাবে।

কেউ টিকা থেকে বাদ যাবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা টিকা দিচ্ছি। টিকা ব্যাপক হারে দিব। টিকার আওতা থেকে কেউ বাদ যাবে না। আমরা সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। যত টাকাই লাগুক, আমরা স্বাস্থ্যসেবা মানুষকে দিচ্ছি এবং টিকার ব্যবস্থা করেছি।

সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, টিকা নেওয়ার পরও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। আপনি হয়তো নিজে বুঝতে পারছেন না, কিন্তু অন্যকে আপনি সংক্রমিত করে দিচ্ছেন। সেই ক্ষেত্রে আপনাকে সচেতন থাকতে হবে এবং সব সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষাটা একটু মেনে চলবেন।

এসময় বিদ্যুৎবিভাগ প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ওয়াসিকা আয়শা খান; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.