‘সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কিনে সবাই লাভবান হবেন’

পুঁজিবাজারে আসছে তৃতীয় প্রজন্মের বীমা কোম্পানি সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শফিক শামীম পিএসসি (অবঃ)। তার নেতৃত্বে মাত্র ৬ বছরে সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স দেশের অন্যতম শীর্ষ বীমা কোম্পানি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। অর্থসূচককে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স ও দেশের বীমা খাতের নানাদিক তুলে ধরেছেন তিনি। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন ইসমত আরা শিল্পী ও মাসুম রহমান

করোনাভাইরাস অতিমারি ব্যবসা-বাণিজ্যের সকল খাতেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বীমা খাতে এই প্রভাব কতটুকু পড়েছে?
অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্যের মতো বীমা খাতের উপরেও অতিমারির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে বোঝা যাচ্ছে। কারণ বীমা কোম্পানিগুলোর ব্যবসার একটি বড় অংশ এক্সপোর্ট-ইম্পোর্টের সাথে সম্পৃক্ত। অতিমারি পরিস্থিতির অবনতি হলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লকডাউন দেওয়া হয়, এতে এক্সপোর্ট-ইম্পোর্ট কমে যায়।তাতে বীমা কোম্পানিগুলোর আয়ও কমে। তবে এটাও ঠিক, ব্যবসা-বাণিজ্যের উপর ২০২০ সালে করোনাভাইরাস অতিমারির প্রভাব যতটা তীব্র ছিল, এখন কিন্তু ততটা নেই। আমদানি-রপ্তানিসহ ব্যবসা-বাণিজ্য এখন অনেকটা-ই স্বাভাবিক। তাই বীমা খাতের ব্যবসা অনেকটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। অতিমারি চলমান থাকলেও বীমা খাতের ব্যবসা গত বছরের চেয়ে ভাল যাচ্ছে।

আমরা দেখেছি, চলতি হিসাববছরের প্রথমার্ধে বেশিরভাগ বীমা কোম্পানির আয় বেড়েছে। এই ধারা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু?
বীমা কোম্পানির আয় বৃদ্ধির পেছনে এই খাতের বিভিন্ন সংস্কারের ভূমিকা রয়েছে। বীমা উন্নয়ন এবং নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এর সাম্প্রতিক নানা উদ্যোগের সুফল আসছে বীমা খাতে। এসব সংস্কারের ফলে কমিশন বন্ধ হয়েছে, রি-ইন্স্যুরেন্সের পরিমাণ বেড়েছে। এজেন্সি কমিশনের নামে যে টাকাগুলো চলে যেতো বিভিন্নভাবে, তা বন্ধ হয়েছে। তাই করোনা অতিমারির কারণে ব্যবসার পরিধি না বাড়লেও নানাভাবে টাকা চলে যাওয়া বন্ধ হওয়ায় বীমা কোম্পানিগুলোর আয় বেড়েছে। কমিশন এবং অন্যান্য বিষয়ে যে নির্দেশনাগুলো বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ জারি করেছে, সেগুলো যদি আমরা মেনে চলতে পারি তাহলে বীমা কোম্পানির এই আয় বৃদ্ধি দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শফিক শামীম পিএসসি (অবঃ)

সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের বীমা খাতের অবস্থা কী? এই খাতের উন্নয়নে আর কী করণীয় আছে?
বীমা খাতের উন্নয়নের কথা যদি আমি বলি তাহলে বলতে হবে, বিগত পাঁচ বছর ধরে বীমা খাত ইতিবাচক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের তথ্য অনূযায়ী, আমাদের টোটাল প্রিমিয়াম ইনকামের সূচক গত পাঁচ বছরে ঊর্ধ্বমুখী-ই হয়েছে, নিম্নমুখী হয়নি। বীমা খাতের এই আয় বৃদ্ধি পেলে স্বাভাবিকভাবেই সরকারের রাজস্বও বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি আমাদের জিডিপিতে বীমার অবদানও বাড়তে থাকে।
বর্তমানে জিডিপিতে বীমা খাতের অবদানের যে হার তা খুব বেশি নয়, প্রায় ১ শতাংশের মতো। তবে আমাদের লক্ষ্য ২০২২-২০২৩ সাল নাগাদ এই হার আরও বৃদ্ধি করার। বর্তমান যে ধারাটি রয়েছে, অর্থাৎ বীমা খাতে স্বচ্ছতা-জবাবদীহিতার যে ধারাটা রয়েছে তা যদি চলমান থাকে, তাহলে বীমা খাত হতে সরকারের রাজস্ব আরও বাড়বে। আমরা ধারণা করছি, পাঁচ বছর পর জিডিপিতে বীমা খাতের অবদান নূন্যতম ৪ থেকে ৫ শতাংশে উন্নীত করা সম্ভব হবে।

সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের শীর্ষ নির্বাহী হিসেবে আপনার কোম্পানির পারফরম্যান্সের কী মূল্যায়ন করেন?
সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড সরকার হতে অনুমোদন পায় ২০১৩ সালে। তবে এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম তথা ব্যবসা শুরু হয় ২০১৪ সালে। প্রথম বছর আমরা উল্ল্যেখযোগ্য কোনো মুনাফা করতে পারিনি। তবে পরের বছর থেকে ভাল মুনাফা করে আসছে এই কোম্পানি। আমরা নির্দিষ্ট কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করায় আমাদের ব্যবসার প্রবৃদ্ধি টেকসই হয়েছে। যার ফলে মাত্র সাত বছরেই সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশের বীমা খাতে একটি ভাল অবস্থান করে নিতে পেরেছে। সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স এখন দেশের শীর্ষ বীমা কোম্পানিগুলোর একটি। এই বিষয়টিকে আমাদের কোম্পানির উল্ল্যেখযোগ্য একটি সাফল্য বলে মনে করি। আর এই সাফল্যের পেছনে আমি মূল যে জিনিসটির কথা বলবো, সেটি হলো আমরা নিয়মের মাঝে থাকি। আমি মনে করি যে, আমাদের মতো করে রেগুলেটর প্রদত্ত বিভিন্ন নিয়ম মেনে চললে যে কোনো বীমা কোম্পানি এমন সাফল্য অর্জন করতে পারবে।

আপনাদের প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে আসতে যাচ্ছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে তাতে সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স এবং বাজারের বিনিয়োগকারীরা ও স্টেকহোল্ডাররা কতটুকু লাভবান হবে বলে মনে করেন?
আপনারা জানেন যে আমরা বাংলাদেশের অন্যতম কনিষ্ঠ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। আমাদেরসহ মোট ২৭ টি কোম্পানি সময়মতো পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত হয়নি বলে বাংলাদেশ সরকারের বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (IDRA) আমাদেরকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য একটি সময় বেঁধে দিয়েছিলো। আমরা নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনার প্রতি সম্মান দেখিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদন করি। আর এর সাড়ে তিন মাসের মধ্যে আমরা আইপিওর অনুমোদন পেয়েছি। আমার বিশ্বাস, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের সামর্থ্য, কোম্পানির পারফরম্যান্স এবং আমাদের কোম্পানির কাজের নিয়মানুবর্তীতা বিবেচনায় এত তাড়াতাড়ি এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফলে আলোচিত ২৭ কোম্পানির মধ্যে তৃতীয় কোম্পানি হিসেবে আমরা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে যাচ্ছি।

তালিকাভুক্তির ফলে সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের প্রধান লাভটা হবে, আমরা আমাদের সাফল্য বাজারের বিনিয়োগকারী তথা দেশের মানুষের সাথে সরাসরি ভাগ করতে পারবো। এটি একটি বড় তৃপ্তির বিষয়। তাছাড়া পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে একটি কোম্পানিকে আরও বেশি কমপ্লায়েন্সের আওতায় আসতে হয়, যা প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা, জবাবদিহীতা বাড়ায়। এতে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন আরও টেকসই হয়। তালিকাভুক্ত হলে সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স এভাবে লাভবান হবে।

সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স তালিকাভুক্ত হলে অবশ্যই বিনিয়োগকারীসহ পুঁজিবাজারের সব স্টেকহোল্ডার লাভবান হবে। কারণ বাজারে ভাল কোম্পানির সংখ্যা যত বাড়বে, বাজারের গভীরতাও তত বাড়বে। আমাদের সর্বশেষ ২০২০ সালের যে একাউন্টসের উপর ভিত্তি করে আমাদের আইপিও অনুমোদন পেয়েছে, তার আলোকে বলতে পারি, আমাদের শেয়ার যারা নিবেন তারা প্রথম থেকেই লাভবান হবেন। আমাদের শেয়ার প্রতি আয় ও শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য সন্তোষজনক। তাছাড়া সেনাবিহনী ও সেনা কল্যাণ সংস্থার সুনামও এই কোম্পানির জন্য একটি অমূল্য সম্পদ।

আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ১৬ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স, এই অর্থ বিনিয়োগে কতটুকু লাভবান হবে এই কোম্পানি?
পুঁজিবাজার থেকে যে ১৬ কোটি টাকা উত্তোলন করবো, তা কীভাবে ব্যয় করা হবে আইপিও প্রসপেক্টাসে তা পরিস্কারভাবে উল্লেখ করা আছে। ওই অর্থের একটি অংশ রিয়েল এস্টেটে, কিছু অর্থ বিভিন্ন সরকারি বন্ডে এবং বাকী টাকা পুঁজিবাজারে (সেকেন্ডারি মার্কেট) বিনিয়োগ করা হবে। এই বিনিয়োগ কোম্পানির মুনাফা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
আপনারা জানেন যে, বর্তমানে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিয়ম-কানুন যথেষ্ট সময়োপযোগী ও বেশ কঠোর। তাছাড়া আমরাও আমাদের অঙ্গীকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলন করা অর্থ আমরা সঠিকভাবে কাজে লাগাবো, যাতে কোম্পানি এবং এর শেয়ারহোল্ডাররা লাভবান হয়।

আইপিওকে সামনে রেখে বিনিয়োগকারী ও স্টেকহোল্ডারদের উদ্দেশ্যে আপনার ম্যাসেজ কি?
এই কোম্পানির প্রধান নির্বাহী হিসেবে আমি একটি কথাই বলতে পারি, এই কোম্পানির সকল পরিচালকই চাকরীরত সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা, এখানে কারো কোনো ব্যাক্তিগত স্বার্থ নেই। সুতরাং আমরা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও বীমা উন্নয়ন এবং নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইআরডিএ) এর সকল নিয়ম-কানুন মেনে চলবো। তাই আমাদের সাথে যদি আপনারা থাকেন আমাদের শেয়ার যদি ক্রয় করেন, কোনো বড়সড় দূর্ঘটনা না হলে আপনারা সবাই আমাদের শেয়ার কিনে লাভবান হবেন।
বিনিয়োগকারী ও স্টেকহোল্ডারদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আইপিওর অনুমোদন দেওয়ার মাধ্যমে কমিশন আমাদের উপর যে আস্থা রেখেছে, সেই আস্থা বজায় রাখতে আমরা সবসময় সচেষ্ট থাকবো।

ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর সাথে গণমাধ্যমের একটা দূরত্ব রয়েছে আমাদের দেশে, এই দূরত্ব কমানো কি জরুরী বলে আপনি মনে করেন?
ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির একটা বড় বন্ধু হলো মিডিয়া। ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর কিছু অনিয়মের কারণে মানুষ কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তাদের বলা ইতিবাচক বিষয়গুলোর উপর ভরসা করতে পারে না। কিন্তু গণমাধ্যম কর্মীরা যখন এই বিষয়গুলো জনসাধারণের সামনে তুলে ধরেন তখন মানুষ ভরসা পায়। ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলো যদি খোলাখুলি ভাবে মিডিয়া সামনে তাদের যাবতীয় বিষয়াবলী তুলে ধরে যেমনটা আজকে আমি তুলে ধরেছি, সেক্ষেত্রে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর লাভ অনেক বেশি। এখন এখানে কথা হলো যদি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলো খোলাখুলিভাবে সবকিছু গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরতে চায় সেক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোকে যথেষ্ট ট্রান্সপারেন্ট হতে হবে, কোম্পানিগুলো যদি নিয়ম-কানুন মেনে ট্রান্সপারেন্ট হয় এবং তাদের যাবতীয় বিষয়াবলী মিডিয়াকে বলে তবেঁ দেশের পুরো বীমা সেক্টরে যে সংকট আছে অতিদ্রুত তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
বাংলাদেশের অর্থনীতি উন্নয়নে বীমা খাতের গুরুত্ব কতোটুকু?

অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য বীমা খাত অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। সারা পৃথিবীতে ব্যাংক-বীমা একসাথে কার্যক্রম পরিচালনা করে। বর্তমানে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে চলে এসেছে, উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষেত্রে আপনারা দেখবেন একজন নাগরিককে তার সম্পদ ও জীবন নিয়ে অতিরিক্ত দুঃশ্চিন্তায় ভুগতে হয়না। কারণ তারা প্রতিটা ক্ষেত্রেই বীমার সহায়তা পায়। তাদের জীবনের যাবতীয় বিষগুলো বীমার আওতাভুক্ত। কিন্তু আমাদের দেশের একজন নাগরিক চাকরী জীবনে আসার সাথে সাথেই কিভাবে একটা বাড়ি কিনবো, কিভাবে আমার বাচ্চাদের পড়াশোনা করাবো, কিভাবে আমার বাবা-মায়ের চিকিৎসার ব্যাবস্থা করবো ইত্যাদি যাবতীয় বিষয় নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় ভুগতে শুরু করেন। এর কারণ বীমার সাথে আমাদের সম্পর্ক কম। বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশে যেখানে আমরা এখন সারা বিশ্বের সামনে উন্নয়নের রোল মডে্ল হিসেবে স্বীকৃত, এরকম একটি দেশে বীমা খাতকে অবশ্যই উন্নয়নের অর্থনীতির সাথে একসাথে আসতে হবে; এতে বীমা একজন জনসাধারনের আস্থার একটি যায়গা হয়ে ওঠে, যার ফলে তারা নিশ্চিন্তে তাদের জীবনধারণ, বিনিয়োগ, চাকরী, চিকিৎসা সবকিছু করতে পারে। এজন্য বাংলাদেশের মতো রোল মডেল এবং উন্নয়নশীল দেশে বীমার গুরুত্ব অপরিসীম।

আপনাদের বর্তমান শেয়ার প্রতি আয় ৩ টাকা ৯৩ পয়সা, কোন বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করে আপনি আশা করেন ভবিষ্যতে এই আয়ের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে?
আগের বছর আমাদের শেয়ার প্রতি আয় ছিলো ৪ টাকা ২৪ পয়সা। করোনাভাইরাস অতিমারির প্রভাবে তা কিছুটা কমে গিয়ে ৩ টাকা ৯৩ পয়সা হয়েছে। ১০ টাকার একটি শেয়ারে, শেয়ার প্রতি আয় ৩ টাকা ৯৩ পয়াসাও কিন্তু কম নয়। আমার প্রতিষ্ঠান পরিচালনার অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে পারি, করোনা পরিস্থিতির মাঝেও আমাদের শেয়ার প্রতি আয় খুব একটা কমেনি, তাই করোনা কেটে গেলে অবশ্যই আমাদের ব্যবসায় নতুন গতির সঞ্চার হবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করেছে। আমাদের দেশে বেশ কার্যকরভাবে করোনার টিকা কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। জনবহুল একটা দেশ হওয়ার পরও সাফল্যের সাথে সরকার যেভাবে করোনা মোকাবেলা করছে, আল্লাহতায়ালা চাইলে হয়তো আগামী ৬ মাসের ভেতরেই এই পরিস্থিতি পুরো নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে আমাদের শেয়ার প্রতি আয় আরও বৃদ্ধি পাবে। আমি আশা করছি আগামী বছরের শুরুতেই আমাদের শেয়ার প্রতি আয় ৪ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। গত সাত মাসের ব্যাবসা পর্যবেক্ষণে আমার মনে হয়েছে সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের এই বছরের ব্যাবসা গত বছরের তুলনায় ভালো ।

বাজারে অন্য যে সকল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি আছে তাদের সাথে আপনাদের পার্থক্যটা কোথায় বলে আপনি মনে করেন?
বাজারে যে কোম্পানিগুলো রয়েছে, তাদের সাথে আমাদের পার্থক্যের কথা যদি বলি, তবে বলবো আমাদের বিশ্বস্ত ক্লায়েন্টদের কথা। আমাদের বিশ্বস্ত কিছু ক্লায়েন্ট রয়েছেন, যারা কখনোই আমাদের ছেড়ে যাবেন না বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। কারণ তারা নিয়মের মাঝে থেকে ব্যবসা করতে চায়, তারা কমিশনের ব্যাপারে আগ্রহী নয়। তারা সর্বদাই একটি ভালো ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সাথে থাকতে চায়, যেখানে ক্লেইম করলে অতি দ্রুতই ক্লেইম পাওয়া যাবে। আইপিওর পর আমাদের প্রতিষ্ঠানের ৪০ শতাংশ শেয়ার পুঁজিবাজারের অওতায় গেলেও, বাকি ৬০ শতাংশ মালিকানা থেকে যাচ্ছে সেনা কল্যাণ সংস্থার কাছে। এখানে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব স্বার্থ নেই। তাই আমাদের শেয়ারহোল্ডারদের প্রতারিত হবার কোনো-ই আশংকা নেই। আমাদের সেনা কল্যাণ সংস্থার নিজস্ব একটি প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয় ও ইতিবাচক ভাবমূর্তি রয়েছে। দেশের মানুষ সহজেই আমাদের উপর আস্থা রাখেন। আর আমরাও স্বচ্ছতা ও সুনামকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। এটিই হচ্ছে অন্য কোম্পানি ও সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের মধ্যে প্রধান পার্থক্যের জায়গা।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.