প্রখ্যাত সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ আর নেই

প্রখ্যাত সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ আর নেই। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রোববার (২৯ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে দক্ষিণ কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। গত ৩১ জুলাই থেকে হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

চলতি বছরের এপ্রিলে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন অশীতিপর এই সাহিত্যিক। সেই সময় শহরের একটি হোটেলে থাকেন তিনি। পরে তাকে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়। ৩৩ দিন লড়াইয়ের পর করোনামুক্ত হয়ে বাড়ি ফেরেন বুদ্ধদেব। তবে আবার অসুস্থ হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও আর বাড়ি ফেরা হলো না তার। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার পাশাপাশি বুদ্ধদেবের মূত্রনালীতে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল বলে জানা গেছে। এছাড়া তার লিভার এবং কিডনিতেও সামান্য সমস্যা ছিল। হাসপাতালে ভর্তির পর ফের কোভিড পরীক্ষা করা হলে তাতে সংক্রমণ ধরা পড়েনি। দৃষ্টিশক্তির সমস্যায় ভোগা বুদ্ধদেব বয়সজনিত নানা সমস্যাতেও ভুগছিলেন।

সমকালীন বাংলা সাহিত্যে নিজের জায়গা গড়ে নিয়েছিলেন বুদ্ধদেব। প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ ‘জঙ্গল মহল’-এর পর থেকে ‘মাধুকরী’, ‘কোজাগর’, ‘অববাহিকা’, ‘বাবলি’-একের পর এক উপন্যাস উপহার দিয়েছেন পাঠকদের। কিশোর সাহিত্যেও ছিল অবাধ বিচরণ। তার সৃষ্ট ‘ঋজুদা’ বা ‘ঋভু’র মতো চরিত্র আকৃষ্ট করে রেখেছে কয়েক প্রজন্মের বহু কিশোর-কিশোরীর মনকে। হলুদ বসন্ত উপন্যাসের জন্য ১৯৭৬ সালে পান আনন্দ পুরস্কার।

১৯৩৬ সালে ২৯ জুন কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন বুদ্ধদেব গুহ। পেশাগত জীবন শুরু করেছিলেন চাটার্ড অ্যাকাউন্ট হিসেবে। ছিলেন একজন নামী চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট। দিল্লির কেন্দ্রীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে পশ্চিমবঙ্গের আয়কর বিভাগের উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য নিযুক্ত করেছিল। আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্রের অডিশন বোর্ডের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের সদস্যও ছিলেন তিনি। বামফ্রন্ট আমলে তাকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বনবিভাগের বন্যপ্রাণী উপদেষ্টা বোর্ড পশ্চিমবঙ্গ বিভাগের উপদেষ্টা বোর্ড এবং নন্দন উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য করা হয়েছিল। বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবনে পরিচালন সমিতির সদস্যও নিযুক্ত হয়েছিলেন। বুদ্ধদেব গুহ খুব সুন্দর ছবিও আঁকতেন। নিজের লেখা একাধিক বইয়ের প্রচ্ছদ তিনি নিজেই এঁকেছেন। গায়ক হিসেবেও তিনি জনপ্রিয়তা পেয়ে ছিলেন

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.