আ.লীগকে হটাতে অভ্যুত্থানের বিকল্প নেই: ফখরুল

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে হটাতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে অভ্যুত্থান করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, আমরা সশস্ত্র সংগ্রামে বিশ্বাস করি না। এ সরকার একটি পুতুল সরকার। ইতোমধ্যে তারা একটি তাঁবেদারি সরকারে পরিণত হয়েছে। তারা মুখে যা–ই বলে, তা–ই সংবিধান।

আজ রোববার (২২ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীর মুক্তির দাবিতে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, অনেকে সংবিধানের কথা বলছেন। কিসের সংবিধান? সরকার যেটা মুখে বলে সেটাই সংবিধান। আজ আপনারা কোথায় বিচার চাইবেন? বিচার বিভাগের কোনো স্বাধীনতা নেই। বিচার বিভাগ সম্পূর্ণভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে নিম্ন আদালতে সাত বছর সাজা দেওয়া হয়েছে, আর সেটা হাইকোর্টে যাওয়ার পর দশ বছর করা হয়েছে। যে মামলার কোনো ভিত্তি নেই। যে মামলায় দুই কোটি টাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেটি এখন ওই ব্যাংকে আট কোটি টাকা হয়েছে। এ প্রশ্নগুলো এখন করে আর লাভ নেই।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, আমরা ১৪ বছর যাবৎ দেখছি— আমরা প্রেস ক্লাবের বাইরে দাঁড়াব, সেটা দিচ্ছে না। আমরা পার্টি অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলব, সেটাও তারা দিচ্ছে না। অর্থাৎ, যখন জনগণ থেকে একটা সরকার বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তখন সে পাওয়ার (শক্তি) দিয়ে টিকে থাকার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। সরকার সেটাই করছে।

‘আমরা দাবি করব— পেশিশক্তি ব্যবহার না করে এই মুহূর্তে এ ফ্যাসিস্ট সরকারকে পদত্যাগ করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে। একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিচালনায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, গাজী রুহুল আমিন সাহেবকে বেআইনিভাবে ১০ মাস আটক করে রাখা হয়েছে। তিনি শুধু একজন সাংবাদিক নন, তিনি একজন স্বাধীনচেতা মানুষ। তিনি সর্বদা সত্য কথা বলেন, কাউকে ভয় পান না। যে কারণে আজ তাকে একটি মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে ১০ মাস আটক করে রাখা হয়েছে। যে আইনে তাকে আটক করা হয়েছে সেটি একটি বিবর্তনমূলক গণবিরোধী আইন। এটি মুক্ত সাংবাদিকতাবিরোধী আইন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, গাজী সাহেবের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রদ্রোহিতা বলতে কী বোঝায়? একজন মুক্তিযোদ্ধা কখনও রাষ্ট্রদ্রোহী হতে পারেন না। এ ডিজিটাল সিকিউরিটি মামলায় সংগ্রামের বয়োবৃদ্ধ সম্পাদককে দীর্ঘ সময় আটক কারাগারে রাখা হয়েছে।

আমার জানা মতে, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে সাড়ে চার হাজার মামলা হয়েছে। সামগ্রিকভাবে আপনারা জানেন— এ দেশে যারা স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলছে, গণতন্ত্রের জন্য কথা বলছে, তাদের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আমাদের বিএনপির ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওয়ার্ডের একটি কর্মীও বাদ যায়নি, যোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।

আলোচনা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরোয়ার ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

নয়া দিগন্তের সম্পাদক মহিউদ্দিন আলমগীরের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন— কবি আব্দুল হাই শিকদার, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন সবুজ, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ডিইউজে সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, ডিআরইউ সভাপতি মোরসালিন নোমানি, ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.