এবার ওমান সাগরে জাহাজ ছিনতাইয়ের দাবি

ওমান উপসাগরে তেলবোঝাই কুইন এমাথা, গোল্ডেন ব্রিলিয়ান্ট, জাগ পুজা ও অ্যাবিস নামের এই চার জাহাজ বা ট্যাঙ্কার হাইজ্যাক হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। যুক্তরাজ্য এবং আমেরিকা দুই দেশই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। অভিযোগ, ট্যাঙ্কার হাইজ্যাক করে তা ইরানের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইরান অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

প্রথমে মনে করা হয়েছিল একটি ট্যাঙ্কার অপহরণ করা হয়েছে। পানামার ফ্ল্যাগ লাগানো ওই জাহাজ সংস্থাটি জানায়, জাহাজের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে একাধিক জাহাজ সংস্থা জানাতে থাকে তাদেরও নিজেদের ট্যাঙ্কারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। প্রতিটি জাহাজই ওই সময় ওমান উপসাগরে কাছাকাছি জায়গায় ছিল। সকাল পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী ছয়টি ট্যাঙ্কারের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ট্যাঙ্কারগুলোকে শেষবার ইরানের দিকে যেতে দেখা গেছিল। যদিও তাদের কারো ইরান যাওয়ার কথা নয়।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাহাজ অপহরণের বিষয়টি তাদের গোচরে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়ে গেছে। যা তথ্য প্রমাণ এখনো পর্যন্ত হাতে এসেছে, তাতে ইরানের দিকেই আঙুল উঠছে। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্রও একই কথা বলেছেন। ঘটনাটি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি জানিয়েছেন, আমেরিকা তদন্ত শুরু করেছে। তার কথাতেও আঙুল উঠেছে ইরানের দিকে।

যুক্তরাজ্যের নৌসেনা কর্মকর্তারা প্রথম হাইজ্যাকের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন। হাইজ্যাকের সম্ভাবনার কথা জানিয়ে তারা বলেন, আরব আমিরাত উপকূলে ফুজাইরাহ থেকে ৬১ নটিকাল মাইল দূরে, অর্থাৎ, ১১৩ কিলোমিটার দূরে হাইজ্যাকের ঘটনা ঘটেছে। সমুদ্র সংক্রান্ত খবরের সংস্থা লয়েড লিস্টের এডিটরও ঘটনাটির সত্যতা স্বীকার করে টুইট করেছেন। এর কিছুক্ষণ পরেই রয়টার্স খবরটি প্রকাশ্যে আনে।

এদিকে ইরান বিষয়টি অস্বীকার করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভুয়া পরিবেশ তৈরি করে ইরানকে চাপে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। এমন কোনো ঘটনা ইরান জানে না। যুক্ত থাকার প্রশ্নই ওঠে না।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার অ্যালার্ট নানা কারণে দেওয়া হয়। কিন্তু একই সময় একই জায়গায় ছয়টি জাহাজ থেকে একই অ্যালার্ট যখন আসে, তখন বোঝা যায়, এর পিছনে বড় কোনো কারণ আছে। ওমান এয়ারফোর্সের বিশেষ বিমান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেছে।

ওমান সাগরে গত সপ্তাহে ইসরাইলি মালিকানাধীন একটি তেল ট্যাংকারে সন্দেহজনক হামলায় দুই ক্রু নিহত হওয়ার এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে একই সাগরে এ ঘটনা ঘটল। ইসরাইল, ব্রিটেন ও আমেরিকা একযোগে ওই হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করলেও তেহরান ওই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। তার প্রতিক্রিয়ায় তেহরান বলেছে, ইরানের বিরুদ্ধে যেকোনো ‘হঠকারিতার তাৎক্ষণিক কঠোর জবাব’ দেয়া হবে। সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এপি

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.