গাজায় ইসরায়েলি হামলা ‘স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ’: এইচআরডব্লিউ

গাজায় নির্বিচারে বিমান হামলা চালানোয় ইসরায়েলের বিরেুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনল আন্তর্জাতিক মানবধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

ইসরায়েলের তিনটি বিমান হামলার দীর্ঘ তদন্তের পর মানবাধিকার সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর তিনটি বিমান হামলায় যে ৬২ জন বেসামরিক ফিলিস্তিনি নাগরিকের প্রাণহানি হয়েছে তার আশপাশে কোথাও সামরিক লক্ষ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। যদিও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, গাজায় তারা শুধু ‘সামরিক লক্ষ্যবস্তুতেই’ হামলা চালিয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের ১১ দিনের বিমান হামলায় ৬৭ শিশু ও ৩৯ নারীসহ অন্তত ২৬০ জন নিহত হয়েছেন।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ গাজায় গত ১০ মে থেকে টানা ১১ দিনের হামলার মধ্যে তিনটি হামলা নিয়ে তদন্ত করে। তদন্তে গত ১৬ মে চালানো বিমান হামলাকে ভয়াবহ বলে উল্লেখ করা হয়। ওই হামলায় তিনটি ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। নিহত হয় ১৮ শিশু, ১৪ নারীসহ অন্তত ৪৪ জন বেসামরিক নাগরিক। ইসরায়েলের দাবি, তাদের হামলার মূল লক্ষ্য ছিল হামাসের ব্যবহৃত সুড়ঙ্গপথ।

গাজার উত্তরে বেট হানুন এলাকায় গত ১০ মের বিস্ফোরণকেও গুরুত্ব দেওয়া হয় তদন্তে। ওই ঘটনায় ছয় শিশুসহ আটজন নিহত হন। তৃতীয়ত, গত ১৫ মে গাজার শাতি শরণার্থী শিবিরের একটি তিনতলা ভবনে বিমান হামলায় নারী-শিশুসহ ১০ জন নিহত হন।

মানবাধিকার সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল কোনো ধরনের পূর্বসতর্কতা ছাড়াই গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি জিবিইউ-৩১ বোমা ব্যবহার করেছে।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হামাস যে চার হাজার রকেট হামলা করেছে, সেটিও যুদ্ধাপরাধের শামিল। কারণ হামাসের রকেট হামলায় ইসরায়েলের দুই শিশু ও এক সৈন্যসহ ১২ জন নিহত হন।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, বেসামরিক লোকজনের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস করার জন্য সব ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। দরকার হলে হামলার আগেই সতর্কতা জারি করা যেতে পারে।

তবে প্রতিবেদনে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্রকে উল্লেখ করে বলা হয়, তারা বিশেষভাবে ‘সামরিক লক্ষ্যবস্তু লক্ষ্য’ করেই হামলা চালিয়েছিল এবং সংঘাতে জড়িত নয় এমন ব্যক্তিদের ‘ক্ষতি কমাতে’ সম্মিলিত প্রচেষ্টাও করেছিল।

তাদের দাবি, সামরিক লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে থাকা বেসামরিক লোকদের আগেই সতর্কবার্তা দিয়েছিল ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। যদিও তাদের দাবির পক্ষে কোন প্রমাণ পায়নি মানবাধিকার সংস্থাটি।

মঙ্গলবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বার্তাসংস্থা এএফপি’কে জানায়, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ শুধু আগে থেকেই নাকচ করে দেওয়া অভিযোগগুলোর দিকেই বার বার নজর দিচ্ছে। কিন্তু তারা হামাস এবং অন্য সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাচ্ছে না।

সূত্র: আল জাজিরা।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.