‘মশার কোনো বর্ডার নেই, সবাইকে সচেতন থাকতে হবে’

মশার কোনো বর্ডার বা সীমানা নেই। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে আরো বেশি সচেতন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

দু’একজন মানুষের দায়িত্বহীনতার কারণে শহর বা গোটা দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আজ সোমবার (১২ জুলাই) স্থানীয় সরকার বিভাগের আয়োজনে সারাদেশে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সিটি করপোরেশন ও অন্য মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দফতর/সংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনার ১০ম আন্তঃমন্ত্রণালয় অনলাইন সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মন্ত্রী বলেন, উত্তর সিটি করপোরেশনে মশা মারলে দক্ষিণ সিটি হবে না অথবা দক্ষিণে মারলে উত্তর হবে না এমনটি ভাবা উচিত নয়। প্রতিষ্ঠান বা বাড়ি-ঘর যারই হোক, আমি-আপনি যেই হই না কেন আমরা সবাই এই শহর ও দেশের মানুষ। মশা নিধনে সবাইকে অর্পিত নাগরিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। সমন্বিত উদ্যোগে কাজ না করলে সুফল আসবে না।

জেল-জরিমানা করার পরও ওইসব বাসা-বাড়ি অথবা ভবনে পুনরায় মশার লার্ভা পাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে এমন তথ্য জানিয়ে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস না করা গুরুতর অপরাধ। আর এই অপরাধের সঙ্গে কেউ সম্পৃক্ত হলে তাকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা হবে।

ইচ্ছাকৃতভাবে এডিস মশার প্রজননের জন্য দায়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষ্যে দুই সিটি করপোরেশনে চিরুনি অভিযানের অংশ হিসেবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

নির্মাণাধীন ভবনগুলোর বেজমেন্ট ও ছাদে বিভিন্ন জায়গায় জমা পানি থাকে। আর এখানেই এডিস মশার প্রজনন বেশি হয়। যারা ভবন নির্মাণ করছেন অথবা নির্মাণকাজ বন্ধ রেখেছেন বা যাদের পরিত্যক্ত ভবন রয়েছে তাদের জমানো পানিতে লার্ভিসাইড অথবা সামান্য পরিমাণ কেরোসিন ঢেলে দেওয়ার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।

ডেঙ্গু নিয়ে এখনও আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এডিস মশা বিস্তার বা প্রজননের সব ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। এডিস, অ্যানোফিলিস বা কিউলেক্স যে মশাই হোক না কেন এগুলো নিধনের জন্য কী করতে হবে তা সবারই জানা। করোনার মধ্যে যেন ডেঙ্গু মাথাব্যথার কারণ না হয় সেটি লক্ষ্য রাখতে হবে।

প্রত্যেক ওয়ার্ডকে দশটি সাব জোন ভাগ করে কাউন্সিলরের নেতৃত্বে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে গঠিত কমিটিকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ত্রাণ বিতরণ, মশা নিধন, জলাবদ্ধতা নিরসন ও দুর্যোগ-দুর্বিপাকসহ যেকোনো সমস্যা দ্রুত সমাধানে এই কমিটিকে কাজে লাগানো সম্ভব।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা বা ঘাস কাটা বছরভিত্তিক অথবা কোয়ার্টারলি না করে নিয়মিত করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রেলওয়ে, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এবং সিভিল অ্যাভিয়েশনসহ অন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অধিক্ষেত্রে মশকের বিস্তার রোধে নিজ নিজ উদ্যোগে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। দায়িত্ব পালনে অবহেলার কোনো সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে অঙ্গীকারাবদ্ধ। তার নেতৃত্বে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ও মিশন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। এখানে কে কোন মন্ত্রণালয়ের, কে কোন পদে আছে সেটা বড় বিষয় নয়, আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা।

সভায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ, গাজীপুর, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দফতর/সংস্থার প্রতিনিধি অংশ নেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.