আলেশা মার্টসহ ৭ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব তলব

আলোচিত-সমালোচিত ৭ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণাধীন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। দেশের সব তফসিলি ব্যাংককে চিঠি দিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর হিসাব তলব করা হয়। চিঠিতে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিষ্ঠানগুলোর লেনদেন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে।

হিসাব তলবের তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে-আলেশা মার্ট, ধামাকা শপিং, সিরাজগঞ্জ শপ, আলাদিনের প্রদীপ, বুম বুম, আদিয়ান মার্ট ও নিডস ডট কম। এসব প্রতিষ্ঠান এবং প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ সংশ্নিষ্ট ব্যক্তির নামে কোনো হিসাব বর্তমানে বা ইতিপূর্বে পরিচালিত হলে তা জানাতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি প্রোফাইল, শুরু থেকে হালনাগাদ লেনদেন বিবরণীও পাঠাতে হবে।

তবে সবচেয়ে বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়নি। অবশ্য গতবছর বাংলাদেশ ব্যাংক ইভ্যালির হিসাব তলব এবং পরবর্তীতে অবরুদ্ধ করেছিল। তখন ইভ্যালি, প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেলের হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়। তবে পরবর্তীতে সেগুলো খুলে দেওয়া হয়।

ইভ্যালিসহ আলোচিত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ক্রেতাদের প্রলুব্ধ করতে বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে পণ্য বিক্রির অভিযোগ আছে। এই প্রক্রিয়ায় দুয়েক জন ক্রেতার কাছে পণ্য বিক্রি করা হলেও অসংখ্য ক্রেতার কাছ থেকে আগাম অর্থ জমা নেওয়া হয়। মাসের পর মাস ক্রেতাদের টাকা জমা পড়ে থাকলেও তাদেরকে পণ্য দেওয়া হয় না। একইভাবে পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্য মূল্যও বাকী রাখা হয়। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোর হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা হলেও ক্রেতা এবং পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থাকে ব্যাপক ঝুঁকিতে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের করা এক তদন্তে দেখা যায়, গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে ইভ্যালীর দেনার পরিমাণ ৪০৩.৮০ কোটি টাকা, যার বিপরীতে কোম্পানিটির চলতি সম্পদ মাত্র ৬৫.১৭ কোটি টাকা। সব সম্পদ বিক্রি করে ইভ্যালি পাওনাদারদের মাত্র ১৬ শতাংশ পরিশোধ করতে পারবে। এরপরও ৩৩৮.৬২ কোটি টাকার পাওনা অপরিশোধিত থাকবে।

গণমাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর দেশের প্রথম সারির ৬টি ব্যাংক তাদের ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড ও এটিএম কার্ড দিয়ে ইভ্যালিসহ ১০টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের পণ্য কেনায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। উপরের প্রতিষ্ঠানগুলোর বাইরে তালিকায় আছে ই-অরেঞ্জ ও কিউকম।

অন্যদিকে গত ২৪ জুন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো আর ক্রেতাদের কাছ থেকে আগাম মূল্য নিতে পারবে না। পণ্য ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার পরই কেবল মূল্য নেওয়া যাবে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.