উৎপাদন বাড়িয়ে চা রপ্তানি করা হবেঃ বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি বলেছেন, চায়ের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সরকার বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বিদেশে বাংলাদেশের চায়ের বিপুল চাহিদা রয়েছে। চায়ের উৎপাদন বাড়িয়ে অভ্যন্তরীন চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।

বাণিজ্যমন্ত্রী আজ শুক্রবার (৪ জুন) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পৃষ্টপোষকতায় এবং বাংলাদেশ চা বোর্ড এর উদ্যোগে ঢাকায় ওসমানী মিলনায়তনে “প্রথম জাতীয় চা দিবস-২০২১” এর উদ্বোধন করে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ, এমপি এবং সদ্য পিআরএল-এ যাওয়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম বাঙ্গালী হিসেবে চা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার গ্রহণ ছিল একটি ঐতিহাসিক বিষয়। ১৯৫৭ সালের ৪ জুন বঙ্গবন্ধু চা বোর্ডের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হয়েছিলেন। সরকার এদিন জাতীয় চা দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু চা বোর্ডের চেয়াম্যানের দায়িত্ব নিয়ে চা শিল্পের ব্যাপক উন্নয়ন এবং চা শ্রমিকদের কল্যাণে অনেক কাজ করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতার বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে চা উৎপাদন বৃদ্ধির নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ১৯৯৬ সালে দেশের উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়ে চা উৎপাদন শুরু হয়েছে। সেখানে চা উৎপাদনের বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, সেখানে চা উৎপাদন করে চাষীগণ লাভবান হচ্ছেন। ঠাকুরগাঁও ও লালমনিরহাটেও চা উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখানে সমতল ভূমিতেও চা উৎপাদন হচ্ছে এবং দিন দিন চা উৎপাদণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চা বাংলাদেশের একটি সম্ভাবনাময় রপ্তানি পণ্য। নতুন জাত উদ্ভাবন করে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীন চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা আগের যে কোন সময়ের তুলনায় বেড়েছে, এখন গ্রামের মানুষও নিয়মিত চা পান করেন। চায়ের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সরকার বিস্তারিত কর্মসুচি গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, বিদেশে বাংলাদেশের চায়ের বিপুল চাহিদা রয়েছে। চায়ের উৎপাদন বাড়িয়ে অভ্যন্তরিন চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। ২০১৯ সালে দেশের ১৬৭টি চা বাগানে চায়ের উৎপাদন ছিল ৯৬.০৭ মিলিয়ন কেজি। এর মধ্যে রপ্তানি হয়েছে .৬০ মিলিয়ন কেজি চা। ২০২০ সালে উৎপাদন ছিল ৮৬.৩৯ মিলিয়ন কেজি, আর রপ্তানি হয়েছে ২.১৭ মিলিয়ন কেজি চা। আর ২০১১ সালে দেশের মোট চা উৎপাদন হতো মাত্র ৫৯.১৩ মিলিয়ন কেজি। উৎপাদন বাড়িয়ে চা রপ্তানি করা হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ,এমপি বলেন, চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে দেশে চায়ের উৎপাদনও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার দেশে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সবধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। চা শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকরা অনেক সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। দেশে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধির আরও সুযোগ রয়েছে। চা শিল্পের উদ্যোক্তাদের সাথে মতবিনিময় করে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করলে চা উৎপাদন বাড়বে। এতে করে চা শিল্প আরও বিকশিত হবে।

বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম, এনডিসি,পিএসসি। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশীয় চা সংসদের সভাপতি এম শাহ আলম, টি ট্রেডার্স এ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের সভাপতি শাহ মঈন উদ্দীন হাসান।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.