রম্য নাটিকা ‘আয়না’র রচয়িতা অচিন্ত্য কুমার ভৌমিক আর নেই

খুলনা বেতারের জনপ্রিয় রম্য নাটিকা ‘আয়না’র রচয়িতা অধ্যাপক অচিন্ত্য কুমার ভৌমিক (৭৮) আর নেই। শুক্রবার (২৮ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে খুলনা মহানগরীর গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি, হার্ট ও ফুসফুসের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন। অচিন্ত্য কুমার ভৌমিক নিঃসন্তান ছিলেন।

অধ্যাপক অচিন্ত্য কুমার ভৌমিক কলেজে অধ্যাপনার পাশাপশি ছিলেন খ্যাতিমান গীতিকার, নাট্যকার, কথাসাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। খুলনার এ বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ছোট ভাই অপূর্ব কুমার ভৌমিক বলেন, অচিন্ত্য কুমার ভৌমিক দীর্ঘদিন ধরে কিডনি, হার্ট ও ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছিলেন। তিন বছর ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। ফুসফুসে পানি জমে গিয়েছিল। আমাদের পৈত্রিক বাড়ি গোপালগঞ্জের ভাটিয়াপাড়া। দেশ স্বাধীনের আগ থেকে ফুলতলার দামুদারে থাকতেন বড় ভাই অচিন্ত্য কুমার। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর অবস্থা খারাপ হলে রাত ৮টায় আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে রাতেই মারা যান। মরদেহ শনিবার দুপুর ১২টায় ফুলতলার দামুদার শ্মশান ঘাটে দাহ করা হবে।

অচিন্ত্য কুমার ভৌমিক খুলনার সরকারি সুন্দরবন কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজেসহ যশোর ও সাতক্ষীরার বিভিন্ন কলেজে বাংলার অধ্যাপক ছিলেন। সর্বশেষ ২০০৪ সালে সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে অবসরে যান।

সমাজের অভ্যন্তরে বাসা বেঁধে থাকা নানা সমস্যা, অসঙ্গতি, ত্রুটি, বিচিত্র অপরাধের ধরণ প্রভৃতি অত্যন্ত চমৎকারভাবে ‘আয়না’ নাটিকার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতেন অচিন্ত্য কুমার ভৌমিক। আয়না নাটিকার ধারাবাহিক পর্বের প্রধান আকর্ষণ ছিল সুরোত। সুরোত ছাড়াও আয়না’র আরো দু’টি চরিত্র হলো ‘ইজ্জত’ ও ‘ময়না ভাবী’। ত্রি-চরিত্রের সমন্বয়ে সংক্ষিপ্ত স্থিতির নাটিকায় সমাজের বিভিন্ন অপরাধের বাস্তব চিত্র অত্যন্ত সফলভাবে তুলে ধরার পেছনে সুরোতের সুদক্ষ ও প্রাণবন্ত অভিনয় ছিল তুলনাহীন।

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের কাছে আয়না খুবই জনপ্রিয় একটি অনুষ্ঠান। আয়না প্রচারের নির্ধারিত দিনে শ্রোতাদের মনে করিয়ে দিতে হয় না, সবাই আগে থেকেই শুক্রবার হলে রেডিও খুলে বসে থাকেন আয়না শুনতে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.