দেশে আরও ২ জনের দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত

দেশে আরও ২ ব্যক্তির দেহে করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে দুই রোগীর শরীরে এই ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে।

হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির আজ শুক্রবার (১৪ মে) গণমাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ভারত থেকে আসা দু’জনের মধ্যে আমরা ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের করোনা ভাইরাস পেয়েছি। নির্দেশনা মোতাবেক তাদের টেস্ট হাসপাতালে (বক্ষব্যাধি হাসপাতাল) পাঠানো হয়েছে। ভারত থেকে যারা আসছেন তাদের আমরা কঠোর নজরদারির মধ্যে রেখেছি।

ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টটি (অফিসিয়াল নাম বি.১.১৬৭) করোনাভাইরাসের ভ্যারিয়েন্টগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রামক ও প্রাণঘাতী হিসেবে পরিচিত। ভারতের করোনা পরিস্থিতির চরম অবনতির জন্য মূলত এই ভ্যারিয়েন্টটিকে দায়ী করা হয়। এই ভ্যারিয়েন্টের কারণে নেপালেরও নাজেহাল অবস্থা হয়েছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুসারে, ইতোমধ্যে বিশ্বের ৪৪টি দেশে এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে।

বাংলাদেশে গত ৮ মে প্রথম কারো দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একজনের দেহে এই ধরণটি পাওয়া যায় বলে জানান রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এএসএম আলমগীর। একই দিনে স্বাস্থ্য বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা গণমাধ্যমে জানান, যশোরে ভারত থেকে আসা ২ জনের দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট এবং ৪ জনের দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের কাছাকাছি বৈশিষ্ট্যের ধরণ শনাক্ত হয়েছে।

গত ১২ মে নারায়ণগঞ্জে ভারতের চেন্নাই থেকে ফেরা এক ব্যক্তির দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়। ওই ব্যক্তি চিকিৎসার জন্যে চেন্নাই গিয়েছিলেন। আর সেখান থেকে এই ভেরিয়েন্ট বহন করে নিয়ে আসেন দেশে। স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার সাথে সাথে ওই ব্যক্তির বাড়ি লকডাউন করে দিয়ে সব সদস্যের আইসোলেশনের ব্যবস্থা করে।

আজ রাজধানীতে নতুন করে একজনের দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ায় জোর আশংকা দেখা দিয়েছে, ইতোমধ্যে হয়তো দেশের আরও অনেক এলাকায় এই ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত জিনোম সিকুয়েন্সিং এর ব্যবস্থা না থাকায় তা চিহ্নিত হচ্ছে না। ঈদে বড় বড় শহরে ছেড়ে যারা গ্রামে গিয়েছেন তাদের মাধ্যমে এই ভ্যারিয়েন্ট আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এদিকে দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের প্রবেশ ঠেকাতে ইতোমধ্যে সরকার বাংলাদেশ ও ভারতের স্থল সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। ভারতে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে যাওয়া ব্যক্তিদের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে বিশেষ অনুমতি গ্রহণ এবং বাধ্যতামূলক কোয়ারিন্টিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও স্বাস্থ্যমন্ত্রী সীমান্ত এলাকার জেলা প্রশাসনকে ওই সব অঞ্চলে করোনার পরীক্ষা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.