ঈদের আগে দূরপাল্লার গণপরিবহন চালুর দাবি মালিক-শ্রমিকদের

স্বাস্থ্যবিধি মেনে সারাদেশে দূরপাল্লার পরিবহন চলাচলের অনুমতিসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে সড়ক পরিবহন সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো। দাবি বাস্তবায়ন না হলে ঈদের নামাজ শেষে সারাদেশের মালিক ও শ্রমিকরা নিজ নিজ এলাকায় বাস ও ট্রাক টার্মিনালে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঈদের পরে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

আজ শনিবার (০৮ মে) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানায় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের সংগঠনগুলো।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান। তিনি বলেন, গত ৬ মে থেকে লকডাউন শিথিল রেখে মহানগর ও জেলার অভ্যন্তরে গণপরিবহন পরিচালনার সিদ্ধান্ত দিয়েছে সরকার। কিন্তু দূরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। এতে মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অথচ বাস-মিনিবাস, সিএনজি চালিত অটোরিকশায় গাদাগাদি করে মানুষ যাতায়াত করছে। এতে করোনা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই স্বাস্থ্য বিধি মেনে দূরপাল্লার গণ এবং পণ্য পরিবহন চালু করে দিতে হবে।

লিখিত বক্তব্যে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন শাজাহান খান। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে মোট আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার পরিবহনসহ সব ধরনের গণপরিবহন এবং স্বাভাবিক মালামাল নিয়ে পণ্য পরিবহন চলাচলের সুযোগ দিতে হবে। লকডাউনের কারণে কর্মহীন সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের আসন্ন ঈদের আগে আর্থিক অনুদান ও খাদ্য সহায়তা প্রদান করতে হবে।

লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মালিকদের যানবাহন মেরামত, কর্মচারী ও শ্রমিকের বেতন, ভাতা ও ঈদ বোনাস ইত্যাদি দেওয়ার জন্য নামমাত্র সুদ ও সহজ শর্তে পাঁচ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিতে হবে।

সারাদেশে বাস ও ট্রাক টার্মিনালগুলোতে পরিবহন শ্রমিকদের জন্য আসন্ন ঈদের আগে ও পরে ১০ টাকায় ওএমএস-এর চাল বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে।

কোভিড-১৯ এর কারণে গণপরিবহন ব্যবসায় অর্থ বিনিয়োগের বিপরীতে সব ব্যাংক ঋণ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ঋণের সুদ মওকুফসহ কিস্তি আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করতে হবে এবং ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট নিয়ে ক্লাসিফাইড ঋণগুলো আনক্লাসিফাইড করতে হবে।

এছাড়া লকডাউনে বন্ধ থাকার সময় গাড়ির ট্যাক্স-টোকেন, রুট পারমিট ফি, আয়কর, ড্রাইভিং লাইসেন্স ফিসহ সব ধরনের ফি, কর ও জরিমানা মওকুফ করে ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত কাগজপত্র হালনাগাদ করার সুযোগ দিতে হবে।

এই ৫ দফা দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে ঈদের নামাজ শেষে সারাদেশের মালিক ও শ্রমিকরা নিজ নিজ এলাকায় বাস ও ট্রাক টার্মিনালে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বলেও জানান শাজাহান খান। এছাড়া, ঈদের পর পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ প্রমুখ।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.