চট্টগ্রামে যুক্তরাজ্য ও আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট, মেলেনি ভারতের

চট্টগ্রামে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্তদের নমুনায় করোনা ভাইরাসের যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের আধিক্য পেয়েছেন গবেষকরা। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সাইয়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) গবেষকরা ১০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করে তাতে এই দু’টি দেশের ভ্যারিয়েন্টের আধিক্য পেয়েছেন। তবে এই ১০টি নমুনায় বর্তমানে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (বি. ১.৬১৭) এর উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।

সিভাসুর অধ্যাপক ড. পরিতোষ কুমার বিশ্বাস, অধ্যাপক ড. শারমিন চৌধুরী, ডা. ইফতেখার আহমেদ রানা, ডা. ত্রিদীপ দাশ, ডা. প্রাণেশ দত্ত, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম ও ডা. তানভীর আহমদ নিজামী এই গবেষণা পরিচালনা করেন।

সিভাসু থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি মূল্যায়ন করে এ গবেষণা কার্যক্রম চালানো হয়েছে। গবেষণার অংশ হিসেবে SARS-CoV-2 বা নোভেল করোনা ভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকুয়েন্স বা জীবন রহস্য উন্মোচন করার জন্য ১০টি নমুনা পাঠানো হয় বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসাআইআর), ঢাকায়। এরপর বিসিএসআইআর-এর দুইজন গবেষক ড. মো. সেলিম খান ও ড. মো. মোরশেদ হাসান সরকার এ গবেষণায় যোগ দেন। তবে গবেষণাটি মূলত চট্টগ্রামকেন্দ্রিক করা হয়েছে।

সেই ফলাফলে দেখা যায়, দশটি নমুনার মধ্যে ছয়টিতে করোনা ভাইরাসের যুক্তরাজ্যের ধরনের (B.1.1.7) উপস্থিতি রয়েছে এবং তিনটিতে দক্ষিণ আফ্রিকান ধরন (B.1.351) রয়েছে। তবে যে ধরন (B.1.617) বর্তমানে ভারতে চিহ্নিত হয়েছে, তার উপস্থিতি নেই। বিভিন্ন বয়সের আক্রান্ত রোগীর কাছ থেকে নমুনাগুলো সংগ্রহ করা হয়। ওই আক্রান্ত রোগীদের পাঁচজনকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল।

১০টি নমুনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৫ এপ্রিলের আগেই যুক্তরাজ্যের ধরনের উপস্থিতি থেকে থাকতে পারে। একই সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকান ধরনও ছিল। তবে আরও বেশি নমুনা থেকে ভাইরাসের জিনোম সিকুয়েন্স করলে প্রকৃত চিত্রটি স্পষ্ট হত। এছাড়া এই ১০টি নমুনার জিনোম সিকুয়েন্সের তথ্য পাবলিক ডাটাবেজ GISAID-এ জমা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক গৌতম বুদ্ধ গণমাধ্যমকে বলেন, দ্বিতীয় ঢেউয়ে চট্টগ্রামে কোন ধরনের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বেশি ছড়াচ্ছে তা জানার চেষ্টার অংশ হিসেবে আমরা (সিভাসু) ১০টি নমুনার জীবন রহস্য উন্মোচন করি। এই গবেষণা কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের সঙ্গে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) দুইজন মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন। ১০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করে আমরা তাতে বর্তমানে ভারতে আক্রমণ করা ভ্যারিয়েন্ট (বি.১.৬১৭) এর কোনও উপস্থিতি পাইনি।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.