ভারতের দ্বিখণ্ডিত হওয়া পৃথিবীর জন্য মঙ্গলকর: ডা. জাফরুল্লাহ

ভারতের দ্বিখণ্ডিত হওয়ায় সারা পৃথিবীর জন্য মঙ্গলকর হবে বলে মনে করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

আজ বৃহস্পতিবার (০৮ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। করোনা সংক্রমণের ভয়াবহতার প্রেক্ষাপটে করণীয় বিষয়ে নাগরিক সংবাদ সম্মেলনের ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আপনি যা করবেন, থুথু আপনার গায়ে এসেই পড়বে। ভারত আপনাকে রক্ষা করবে না। ভারত জানে কখন আপনাকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে হয়।

তিনি বলেন, আপনারা সমঝোতা করেছেন, কী দিয়েছে? খালি প্লেট দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে তারা যতটা সহায়তা করেছে, মুক্ত হওয়ার প্রথম মাসে সেই অর্থ তুলে নিয়েছে ভারত।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরও বলেন, আজ ভারতকে পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই, তুমি আমাকে সাহায্য করেছো সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। তোমাকে আরও বেশি কৃতজ্ঞ হতে হবে, কারণ তোমাকে আমরা রক্ষা করেছি।

‘ভারত এখনো যে অখণ্ড আছে তার চাবিকাঠি কিন্তু আমাদের হাতে। আমরা রক্ষা করেছি বলে এখনো ভারতের অরুণাচল, মনিপুর, ত্রিপুরা, কাশ্মীর এক আছে। তবে ভারতের দ্বিখণ্ডিত হওয়ায় সারা পৃথিবীর জন্য মঙ্গলকর হবে।’

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, করোনা জাতীয় জীবনে ভয়াবহতা সৃষ্টি করেছে। করোনায় একজন মানুষের মৃত্যু হয় কিন্তু পুরো পরিবারকে হত্যা করছে সরকার। কারণ সরকারের অব্যবস্থপনা, সরকারের জবাবদিহিতার অভাব, কোনো ধরনের পরোয়া না করা। একটা আইসিউতে প্রতি দিনের খরচ ৩০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকা। অ্যান্টিসেপটিক ও ডিজইনফেক্টেডের ওপরেও ট্যাক্স আছে। আমরা ১৩০০ টাকার ওষুধ ৪০০ টাকায় দিচ্ছি। চিকিৎসা করাতে গিয়ে একটি পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়। এটা সরকারের ব্যর্থতা। সরকার নির্দিষ্ট বিষয়ে অজ্ঞ লোক দিয়ে সব কিছু চালাচ্ছে।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, আইসিইউ এর ওষুধের দাম খুব বেশি। কাজেই চিকিৎসা করাতে গিয়ে পরিবারগুলো সর্বশান্ত হচ্ছে। একটি সিরিঞ্জের সুইয়ের ট্যাক্সও ৩১ শতাংশ। এই জিনিসগুলো পরিবর্তন করতে হবে। সকল ওষুধের মূল্য সরকার নিয়ন্ত্রণ করবে। তাহলে ওষুধের দাম বর্তমান দামের তুলনায় এক তৃতীয়াংশে নেমে আনা সম্ভব। অক্সিজেনের ওপরেও ভ্যাট ১৯ শতাংশ।

ভারতীয় কোম্পানি সময় মত দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন পাঠাচ্ছে না। কারণ তাদেরও চাহিদা বেশি। এই জন্য সরকারকে নিজ দেশে উৎপাদনে যেতে বলেছিলাম। ড. বিজন কুমার শীলের মতো মানুষের প্রয়োজন আছে উল্লেখ করে তাকে অবিলম্বে ভিসা প্রদানের জন্য সরকারকে অনুরোধ করেন।

তিনি বলেন, সবেমাত্র মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা হয়েছে। ৫০ হাজারের মত পরীক্ষায় পাস করেছে। তারা ১০ হাজার ভর্তি করছেন। এটা হওয়া উচিত ২০ হাজার। ২০ হাজার ছাত্রকে মেডিকেলে ভর্তি করানো উচিত। তাদের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে ফিজিক্স-কেমিস্ট্রি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ বোঝে কিনা সে বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। সমাজের শ্রেণি বোঝে কিনা? সমাজের জন্য দরদ আছে কিনা? সাধারণ মানুষের জন্য তার বিবেক কাঁদে কিনা? এই সবের কোনো কিছুই পরীক্ষায় নেই। আমরা তাদের ডাক্তার বানাচ্ছি, কিন্তু মানুষ বানাচ্ছি না।

সংবাদ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু। উপস্থিত ছিলেন গনসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নূরুল হক নূর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য নাঈম জাহাঙ্গীর, মুক্তিযোদ্ধা ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, রাষ্ট্র চিন্তার দিদারুল ভুঁইয়া প্রমুখ। জুমে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও বেলা’র নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওনা হাসান।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.